বুধবার জেলা পরিষদ নির্বাচন,জনপ্রতিনিধিরাই ভোট দেবেন
বিশেষ প্রতিবেধক : সোমবার মধ্যরাত থেকে শেষ হয়েছে জেলা পরিষদে নির্বাচন প্রচারণা । দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বুধবার। সকাল ৯ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলায় স্থাপিত কেন্দ্রে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে কোনো ব্যালটে যদি কেউ পরিচিতিমূলক সংকেত ব্যবহার করেন বা প্রকাশ্যে ভোট দেন তবে সেই ব্যালট বাতিল হবে। একইসঙ্গে যে বা যারা এ কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন্দ্রে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রিজাইডিং অফিসার এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এ বিষয়ে কমিশন থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, কোনো ভোটার বা জনপ্রতিনিধি ভোটকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ভোটারকে তল্লাশি করে তা নিশ্চিত করবেন। ব্যালট পেপারের কোথাও পরিচিতিমূলক সংকেত চিহ্ন ব্যবহার করলে তা বাতিল করা হবে। এবং প্রকাশ্যে ভোটও দিলে তা বাতিল ও দণ্ডনিয় অপরাধ বলে গন্য হবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, কেউ বলছেন-ক্যামেরায় ছবি তুলে আনতে, কেউ বলছেন ব্যালট পেপারের পেছনে বিশেষ চিহ্ন দিতে। এ ধরনের কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
এ নির্বাচনে স্থানীয় সরকারের সিটি, পৌর, উপজেলা ও ইউপি জনপ্রতিনিধিরা ভোট দেবেন। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে কিছু স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এসেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ‘শিগগির’ এমপিদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল সোমবার শেরে বাংলানগরস্থ ইসি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। ইসি জানিয়েছে, ৬১ জেলায় ভোট হচ্ছে এবার। প্রতি জেলায় চেয়ারম্যান একজন, সাধারণ সদস্য ১৫টি ওয়ার্ডে ১৫ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটারের এ নির্বাচনে জেলা ও উপজেলায় ওয়ার্ডভিত্তিক ৯১৫টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন; কুষ্টিয়া জেলায় চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর আদালতের আদেশে তা স্থগিত করা হয়।
প্রতি কেন্দ্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেট
প্রতিকেন্দ্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে কমিশন। ভোটকেন্দ্রে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি ভোটকক্ষের সামনেই একজন করে নির্বাহী হাকিমকে নিয়োজিত রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিশনার শাহ নেওয়াজ।
তিনি বলেন, অন্যান্য নির্বাচনের মতো পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তা বাহিনী কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থান করবে। কেন্দ্রকে ঘিরেই নিরাপত্তা বলয় করবো।
প্রার্থী-ভোটার সংখ্যা
কার্যত ৩৯ জেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে। নির্বাচনে প্রতি জেলায় মোট কেন্দ্র ১৫টি। নির্বাচনে মেয়র পদে ১৪৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২ হাজার ৯৮৬ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৮০৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। ২১ জন চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ৫৩ জন সংরক্ষিত সদস্য ও ১৩৯ জন সাধারণ সদস্যও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সারাদেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ৬৩ হাজার ১৪৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ ৪৮ হাজার ৩৪৩ ও নারী ১৪ হাজার ৮০০ জন।
নির্দলীয় এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন অনেক জেলায়। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এ নির্বাচনের সমালোচনা করে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।