জানুয়ারীতে ফেনী নদীর রামগড় অংশে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর নিমার্ণ কাজ শুরু

0

শ্যামল রুদ্র, রামগড় (খাগড়াছড়ি) :  খাগড়াছড়ির রামগড় ও ত্রিপুরার সাবরুম এর ওপর দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদীর রামগড় অংশে চলতি জানুয়ারী মাসেই বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু -১ এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ভারতীয় অর্থায়নে এ মৈত্রী সেতু নির্মাণ করা হবে। তবে সেতু ছাড়া রামগড় স্থল বন্দরের অন্যান্য উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো বিশ্ব ব্যাংকের অর্থে বছরের শেষ নাগাদ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী।

তিনি আরও জানান রামগড় স্থলবন্দর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ২৩ তম। এ জন্য রামগড়ের মহামুনিতে ১০ একর জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রয়োজনে পরে আরও জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি বৈঠক গত সোমবার (২,জানুয়ারী) খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে তপন কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের কাছে উপরোক্ত তথ্য দেন।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। পার্বত্যচট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য পরিকল্পনা নুরুল আলম চৌধুরী, বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী মো. হাসান আলী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য রক্তোৎপল ত্রিপুরা , রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফরহাদ, খাগড়াছড়ি জেলা পরিসদ সদস্য মংশেপ্র“ চেীধুরী অপু, খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সুদর্শন দত্ত, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আবু তাহের মোহাম্মদ, উন্নয়ন কর্মী মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এর আগে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আয়োজনে গত ৭ ডিসেম্বর রামগড় পৌর মিলনায়তনে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের উপস্থিতে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ দলের টিম লিডার ছিলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চট্রগ্রামের অতিরিক্ত প্রধান প্রকেীশলী বিধান চন্দ্র ধর অন্যদিকে ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের জাতীয় সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আনন্দ কুমার।

প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র ধর সাংবাদিকদের তখন জানিয়েছিলেন , ফেনী নদীর ওপর ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্যের সংযোগ সেতুটির নির্মাণ কাজ ভারতের অর্থায়নে জানুয়ারী ২০১৭-তেই শুরু হবে। তবে মূল সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ১৫০ মিটার। ধারনা করা হচ্ছে ২০১৯ সাল নাগাদ এর কাজ সম্পন্ন করা যাবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৬ জুন ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেনী নদীর ওপর রামগড়- সাবরুম মৈত্রী সেতু -১ এর ভিত্তিপ্রস্তর উম্মোচন করেন।

পার্বত্য চট্রগ্রামের প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত ১৯২০ সালের সাবেক মহকুমা শহর খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় স্থলবন্দর স্থাপনের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ দেড় যুগের পর আবারও গতি পেতে যাচ্ছে।

১৯৯৬ সালে সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রামগড়ে স্থলবন্দরের স্থাপনের ঘোষনা দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৯৯৬ সালের ২৮ জুলাই স্থলপথ ও অভ্যন্তরীণ জলপথে ভারত ও মায়ানমার থেকে আমদানি-রপ্তানি বা খাদ্য ছাড়করণের উদ্দেশে দেশে ১৭৬টি শুল্ক ষ্টেশনের তালিকা ঘোষনা করে।

ওই তালিকায় ৪৮ নম্বর ক্রমিকে ছিল রামগড় স্থল শুল্কষ্টেশন। শুল্ক ও বর্ণিত পদ্বতি শর্তাবলী পালন করে পণ্যের গুনাগুন, পরিমাপ, মূল্য ও শুল্ক শ্রেণী বিন্যাস সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা যাবে।

জানা যায়, সরকার ঘোষিত ১৭৬টি স্থল বন্দরের বেশকিছু ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় রামগড় স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ দীর্ঘদিন ফাইল চাপা থাকলেও ২০১০ সালে স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ পুনরায় শুরু হয়।

দীর্ঘদিনধীরগতিতে কাজ চললেও স¤প্রতি ভারত-বাংলাদেশ উভয় পক্ষ ত্বরিত গতিতে স্থলবন্দর বাস্তবায়নের কাজ শুরু করায় এলাকার ব্যবসায়ীসহ সকল মহল আশার আলো দেখছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.