চাকুরীর জন্য স্বতন্ত্র বিধিমালা প্রণয়নের দাবি বিসিএসদের

0

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন জাতীয়করণকৃত কলেজ শিক্ষকদের জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে শিক্ষা ক্যাডার বর্হিভূত রেখে তাদের নিয়োগ, পদায়ন, জ্যৈষ্ঠতা, পদোন্নতি, পরিচালনা ও চাকুরীর জন্য স্বতন্ত্র বিধিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) সমিতি চট্টগ্রাম সাংগঠনিক বিভাগের নেতৃত্ববৃন্দ। সোমবার (১৬ জানুয়ারী) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি চট্টগ্রাম সাংগঠনিক বিভাগের সহ সভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দত্ত। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে। ৩২৫টি বেসরকারি স্কুল জাতীয়করণ করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ৩১৫টি বেসরকারি কলেজের জাতীয়করণকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় জাতীয়করণের এ মহৎ উদ্যোগকে বির্তকিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কলেজের শিক্ষকগণকে ক্যাডারভূক্ত করার পাঁয়তারা চলছে। যা কোনভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণীত হলেও সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও প্রায় ৭ বছরেও জাতীয়করণের সাথে সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র চাকরি নীতিমালা প্রণীত হয়নি।

তিনি বলেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা একটি অভিন্ন প্রক্রিয়ায় সরকারী কর্ম কমিশনের সুপারিশে বাংলাদেশ ক্যাডার কম্পোজিশন রুলস ১৯৮০ এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ এর আওতায় সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করে প্রারম্ভিক, লিখিত, মনস্তাত্তিক, মৌখিক, স্বাস্থ্যগত ও নিরাপত্তাগত এই ৬টি প্রতিযোগিতা মূলক ধাপ পার হয়ে ক্যাডার অফিসার পদে যোগদান করেছেন এবং ভবিষ্যতেও নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, গত দুইদশকে কলেজ জাতীয় করণের সুযোগে কোন বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যতীত যোগ্যতার ঘাটতি সম্পন্ন অনেক কলেজ শিক্ষক ক্যাডার ভূক্ত হয়েছেন, যা শিক্ষা ক্যাডারের জন্য মানহানিকর ও ক্যাডার রুলস পরিপন্থি।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণের সরকারি উদ্যোগের সাথে আমরা একমত। তবে সংশ্লিষ্ট কলেজসমূহে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য পৃথক নিয়োগ, পদায়ন, জৈষ্ঠতা, পদোন্নতি, পরিচালনাসহ তাদের ক্যাডার বহির্ভূত করে চাকরির শর্ত নির্ধারণপূর্বক নীতিমালা প্রণয়ন করে প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। বিসিএস শিক্ষা সমিতি শিক্ষা ক্যাডারের স্বার্থ ও মর্যাদা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। ন্যায্য দাবি আদায়ে আমাদের পেছনে আসার কোন উপায় নেই। যা শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের প্রশ্ন। অস্তিত্ব রক্ষায় ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির চট্টগ্রাম সাংগঠনিক বিভাগের যুগ্ম মহাসচিব সুমন বড়ুয়া বলেন, জাতীয়করণকৃত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরি সরকারি হোক এবং সে অনুযায়ী বেতন ভাতাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা তারা পেতে পারেন। এ বিষয়ে আমাদের কোন দ্বিমত নেই। তবে ওই শিক্ষকদের কোনভাবেই ক্যাডারভুক্ত করা যাবে না। প্রায় ১৫ হাজার ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের মর্যাদার ওপর ৩১৫টি কলেজের প্রায় ২০ হাজার বেসরকারি শিক্ষকদের চেপে বসার আশঙ্কায় দেশের সকল সরকারি কলেজ ও শিক্ষা ক্যাডার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের শিক্ষা ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত করলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের বেশিরভাগ কর্মকর্তা তাদের জেষ্ঠতা হারাবেন। পরবর্তী মেধাবী শিক্ষার্থীরা আর কেউ শিক্ষা ক্যাডারে আসতে চাইবে না। চাই চাকরির শর্ত নির্ধারণ করে নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অঞ্জন কুমার নন্দী, সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ঝরনা খানম, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব প্রফেসর মো. আবদুল মুবিন, বাকলিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সিরাজউদ্দৌলা, সাতকানিয়া সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল আনোয়ার চৌধুরী, সরকারি সিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জাহেদুল হক, সমিতির সাংগঠনিক সচিব চট্টগ্রাম কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নূরুল বাশার, কেন্দ্রীয় সদস্য যথাক্রমে পটিয়া সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম, সরকারি কমার্স কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো: কামাল হোসেন, সরকারি সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক জাবেদ নুর, আজম আনোয়ার সাদত, চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক বেলাল হোসেন প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.