বাঁশখালীতে বাংলাদেশের একমাত্র কুম্ভমেলা শুরু

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী: বাঁশখালীতে আজ থেকে শুরু হলো বাংলাদেশের একমাত্র ঋষিকুম্ভ মেলাদেশের একমাত্র এই ঋষিকুম্ভ মেলায় কয়েক লক্ষাধিক লোকের অংশগ্রহণ হবে বলে সূত্রে জানা যায়।বাঁশখালীর ঋষিধাম যেটা সারাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থ স্থান হিসেবে পরিচিত।

এখানে শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ প্রতিষ্ঠিত এই ঋষিধামে বাংলাদেশের একমাত্র ঋষিকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর অনুষ্ঠিত এই ঋষিকুম্ভ মেলাকে ঘিরে বাংলাদেশ-ভারত তথা উপ-মহাদেশের কয়েক লক্ষাধিক সাধুসন্ন্যাসী ও পূণ্যার্থীগণ উপস্থিত হয়ে এখানে ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদন করেন।

সেই ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে ১২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৮ দিন ব্যাপী বাঁশখালীর ঋষিধামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভ মেলা। যা বাংলাদেশের আর কোথাও অনুষ্ঠিত হয় না। বাঁশখালীতে শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ ১৯৫৭ সাল থেকে এই ঋষিকুম্ভ মেলার শুভারম্ভ করেন। প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর এই ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

এবার হচ্ছে ঊনবিংশতম ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভ মেলা। ভারতের ইতিহাস প্রসিদ্ধ ৪টি স্থানে এই ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেগুলো হল- ভারতের ১) হরিদ্ধার ২) প্রয়াগ ৩) উজ্জয়িনী অবন্তিকা ৪) নাসিকা (গোদাবরী তট) স্থানে হয়ে থাকে। যেখানে লাখো ভক্ত জনতা, মুনি, গুণী, ধ্যানী-যোগী, জ্ঞানী, সাধু-সন্ত, ঋষিদের সমাবেশ এবং মিলন মেলা ঘটে। যেখানে দুরত্ব ঘুচিয়ে নৈকট্য, দ্বৈত খ-ত্ব-সীমাবদ্ধতা, সংকীর্ণতা ঘুচিয়ে অদ্বৈত অখ- বা বিরাটত্ব, সীমাহীনতা, সম্প্রসারিতা তথা অসীমের বৃহৎ মহৎ সৎ উদারতা প্রসারতার স্রোতধারায় অবগাহন করে কায়িক, মানসিক, আত্মিক মুক্তির দ্বার উম্মোচন করেন।

আজ প্রথম দিবস ৫ ফেব্রুয়ারী ভোরে মঙ্গল আরতি ও জয়গানে মঙ্গল আহবান, জাতীয় পতকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য মহোশোভাযাত্রা, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের পূজা, অতিথিশালার শুভ উদ্বোধন, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ, ভক্ত সম্মেলন ও অদ্বৈত সঙ্গীতাঞ্জলি, দশমহাবিদ্যা পূজার অধিবাস, মহাপ্রসাদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হবে। বাঁশখালীর ঋষি কুম্ভ মেলার আয়োজনের ব্যাপারে জানতে চাইলে মেলার অন্যতম আয়োজক শ্রী গুরু সংঘের সভাপতি লায়ন প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ বলেন, সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে গুরু মহারাজের অশেষ কৃপায় আয়োজন সম্পন্ন করা হচ্ছে। দেশ-বিদেশের শুভার্থীরা যাতে যথাযথ ভাবে অবস্থান করতে পারেন সে ব্যাপারে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি কুম্ভ মেলা যথাযথ ভাবে সু-সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনসহ সকল স্তরের জনগণের মত বিনিময়ের কথাও জানান।

এ ব্যাপারে বাঁশখালীর ঋষিধাম ও তুলসীধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, গুরুজীর আর্শিবাদে মেলা সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশারাখি এবার ঊনবিংশতম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ সকল ভক্তদের আগমনে মিলন মেলায় পরিণত হবে।

এদিকে মহাশোভা যাত্রা উদ্যাপন পরিষদের আহবায়ক ও বাঁশখালী পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ গুহ জানান, প্রতিবারের মত এবারও বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রার মাধ্যমে আমাদের ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সকল শ্রেণির নাগরিকদের অংশগ্রহণে আমাদের মহাশোভাযাত্রা হবে প্রাণবন্ত এই আশা রাখি।