হাবিলাসদ্বীপ-কোলাগাঁও সড়কের বেহাল দশা

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধি:: সড়ক নয়, যেন গ্রামীণ মেঠো পথ। স্থানে স্থানে খানাখন্দ, উঠে গেছে পিচঢালাই। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত পটিয়ার পাচুঁরিয়া-কালারপুল সড়কের ৭ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ কিলোমিটার অংশের দশা বেহাল। সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদ। সড়কের ওই স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। উঠে গেছে কার্পেটিং। এ ছাড়া জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ওই সড়কে অবস্থিত সফর আলী মুন্সিরহাট সেতু। এ কারণে ঝুঁকি চলছে যানবাহন। তবে এ সড়কটি কার্পেটিং করার জন্য ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে চট্টগ্রাম দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়ের মিয়া জানান।
সড়কজুড়ে গর্ত ছাড়াও শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালু ও বর্ষাকালে কাদামাটির অত্যাচার সইতে হয় যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। এ কারণে পটিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলার সাত ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের পাচুঁরিয়া থেকে কোলাগাঁও ইউনিয়নের কোলাঁগাওয়ের টেক সড়কের বেহাল দশায় জন দূর্ভোগ বেড়েই চলেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ার পরও সড়কটি চলাচল উপযোগী করছে না সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ। সড়কটির কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্ঠি হওয়ায় শিল্পএলাকার কার্ভাড ভ্যান, কন্টেইনারবাহী ট্রাক, ট্রেইলর, ভারী যানবাহন প্রতিনিয়ত আটকে পরেছে। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ৫০-৬০ টি ট্রাক (যার ওজন ৫০ টনের অধিক) আসা যাওয়া করে। যা শিকলবাহা পাওয়ার প্ল্যান্টের নতুন ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সিলেটের পাথর আনা-নেওয়া করে। এত ছোট সড়কে এই অধিক পরিমান ভারী ট্রাক চলাচলের ফলে সড়কটির পলস্তেরা-পাথর উঠে গিয়ে এখন এটি খালে পরিণত হয়েছে। যার দরুণ এই রোডে নিয়মিত চলাচলকারী গাড়িগুলো প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাচুঁরিয়ার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোলাগাঁও ইউনিয়নের ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার অংশে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথায়ও কোথায়ও সড়কটি দেখতে খালের মতো হয়ে পড়েছে। সড়কটির কারর্পেটিং উঠে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। যানবাহন চলাচলের সময় ধুলাবালুতে চারদিক ঢেকে যায়। মনে হয় যেন গ্রামের কাচাঁ মাটির রাস্তা, কারর্পেটিং উঠে গিয়ে কাচাঁ রাস্তায় পরিণত হয়েছে।এ ছাড়া সফর আলী মুন্সির হাটের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এতে দ্রুতগামী যানবাহন দূর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। উক্ত সড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খানাকন্দকে ভরা। মারাত্নক ঝুঁকির মাঝে চলছে সড়কটি দিয়ে যানবাহন ও জন চলাচল। এ সড়ক দিয়ে শিকলবাহা এলাকায় নির্মিতব্য ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাচামালবাহী গাড়ী ও পাশ্ববর্তী ৬ টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ওয়ের্স্টান মেরিন, ফোর এইচ গ্রুপ, এনার্জি প্যাকের মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পন্যের প্রায় অর্ধশত ভারী যানবাহন আটকে রয়েছে। এছাড়া উক্ত সড়ক দিয়ে হুলাইন ছালেহ নুর কলেজ, চরকানাই উচ্চ বিদ্যালয়, হাবিলাসদ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয়, লাখেরা উচ্চ বিদ্যালয়, কালারপোল উচ্চ বিদ্যালয় ও কালারপোল অহিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাসহ ৭ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত আসা যাওয়া করে। পড়তে হচ্ছে দূর্ভোগে।

চরকানাই গ্রামের সফর আলী মুন্সির হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মফিজুল আলম বলেন, কোলাগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত কয়েকটি শিল্পকারখানার ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে গত তিন বছর সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাবিলাসদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি স্থায়ী মেরামতের জন্য পটিয়ার সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সংস্কারের প্রতিশ্রুতি মিললেও এখনো কোনো কাজ হয়নি।’

হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, এ সড়ক দিয়ে উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ, কোলাগাঁও, ধলঘাট, কেলিশহরসহ পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী উপজেলার তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও ছাত্রছাত্রী চট্টগ্রাম নগর ও পটিয়া সদরের যাতায়াত করে। সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ‘সড়কটি স্থায়ী মেরামতের জন্য পটিয়ার সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সংস্কারের প্রতিশ্রুতি মিললেও এখনো কাজ শুরু করেনি কর্তৃপক্ষ।’

চট্টগ্রাম দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়ের মিয়া জানান, এ সড়কটি এলজিডির অধিনে ছিল। পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধরী চেষ্টা তকবিরের ফলে এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অন্তভুক্ত করা হয়েছে। এ সড়কটি কার্পেডিং করার জন্য ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে টেন্ডার ও আহবান করা হয়েছে। মন্ত্রানালয় থেকে এ বরাদ্দে পান্ট পাওয়া গেলে সহসা ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হবে। আশা করি চলতি শুস্ক মৌসুমে এ সড়কের কার্পেডিং কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.