বাঁশখালীতে কুকুরে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ জনগণ

0

বাঁশখালী প্রতিনিধি::বাঁশখালীর ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা সহ সর্বত্রে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও পাগল কুকুর কিংবা গৃহপালিত কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে জনগণ। কুকুরে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের ভ্যাকসিন (টিকা) চড়া দাম হলেও বাধ্য হয়ে জনগণ একটি কুকুর আক্রান্ত রোগীকে ৫ বার এ ভ্যাকসিন প্রদান করতে হয়। সূত্র মতে, বাঁশখালীতে ওয়ারিশহীন ও পাগলা কুকুরে আক্রান্ত হয়ে বিগত জানুয়ারী থেকে জুলাই ১৬ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মানুষ কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র মতে, জানুয়ারীতে কুকুরে আক্রান্ত ৮৫ জন, অন্যান্য পোকায় আক্রান্ত ৩ জন। ফেব্র“য়ারীতে কুকুরে আক্রান্ত ২৮ জন, অন্যান্য পোকায় ১ জন। মার্চে কুকুরে আক্রান্ত ৩৬ জন, অন্যান্য পোকায় ৭ জন। এপ্রিলে কুকুরে আক্রান্ত ৩৭ জন, অন্যান্য পোকায় ১৭ জন। মে মাসে কুকুরে আক্রান্ত ২৯ জন, অন্যান্য পোকায় ২৫ জন। জুনে কুকুরে আক্রান্ত ২৮ জন, অন্যান্য পোকায় ২৩ জন। জুলাই মাসে ১৬ তারিখ পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হিসাবে মতে কুকুর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৩ জন।

এ রোগী নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নানা ভাবে বিড়ম্বনা পোহাতে হয় তাদের। বিশেষ করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ রোগীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন ভ্যাকসিন/টিকা সরবরাহ না থাকায় রোগী আসার সাথে সাথে ছড়া মূল্যের এ টিকা দেওয়ার জন্য রোগীদের দেওয়ার মত প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় নানা ভাবে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।

এ দিকে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কুকুরে আক্রান্ত রোগীদের সপ্তাহে ৩ দিন রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার ফি টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখানোর পর ফ্রিতে এ টিকা প্রদান করা হয়। তবে রোগীর প্রয়োজন সাপেক্ষে এ টিকা সব সময় পাওয়া যায় না বলে অনেকে অভিমত।

বাঁশখালীতে প্রচুর পরিমান বেঁওয়ারিশ ও পাগল কুকুর প্রধান সড়ক সহ প্রতিদিন বিভিন্ন অলি-গলিতে ঘুরে ঘুরে মানুষ ও বিভিন্ন পশু-পাখিকে আক্রান্ত সহ নানাভাবে আঘাত করলেও সে ব্যাপারে কার্যত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না বলে সাধারণ ভূক্তভোগীদের অভিযোগ। তাদের মতে এ বেঁওয়ারিশ ও পাগলা কুকুর গুলো যদি বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিধন করা যায় তাহলে সাধারণ জনগণ এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পেত।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আসমা তাজনীম বলেন, কুকুর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রচুর পরিমানে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে পাগলা কুকুর ও ওয়ারিশবিহীন কুকুরের ব্যাপারে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাছাড়া কুকুরে আক্রান্ত গরীব ও অসহায় রোগীদের এ টিকা পেতে নানাভাবে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তৌহিদুল আনোয়ার জানান, কুকুরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ভ্যাকসিনের উপজেলা হাসপাতালে কোন বরাদ্দ নাই। তবে উপজেলা পরিষদ তাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এ টিকা দিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, কুকুর আক্রান্ত রোগীদের ইনজেকশান ঠবৎড় জধন অথবা জবনরী ঠপ দেওয়া যায়। জানা যায়, জবনরী ঠপ ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত মূল্যে বাজার থেকে কিনতে হয়। তিনি বলেন, হাসপাতাল পর্যায়ে এ ঔষধগুলো সরবরাহ করা হলে রোগীদের জখন প্রয়োজন তখন তা প্রয়োগ করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

এ দিকে কুকুরের ভ্যাকসিনের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, বাঁশখালী উপজেলা উন্নয়ন তহবিল, স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে এ টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে। যে সব রোগী আক্রান্ত হয়ে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নেবে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সত্যায়িত কপি নিয়ে পরিষদে আসবে তাদেরকে এ টিকা সরবরাহ করা হবে। তিনি বলেন, চলতি জানুয়ারী থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৪০০ টিকা সরবরাহ করা হয়েছে।

বাঁশখালীর কুকুর আক্রান্ত মানুষের জন্য সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন / টিকা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ জনগণ। অপরদিকে ওয়ারিশবিহীন ও পাগলা কুকুর নিধনের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবে এ প্রত্যাশা জনগণের।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.