হাসিমুখে মেয়র পদ থেকে বিদায় নেব- আ জ ম নাছির
গোলাম সরওয়ার,সিটিনিউজ :: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন কাজের প্রতি দৃড়তার কথা জানিয়ে বলেন,
“যদি দলীয়করণ ও দুর্নীতি করতে হয় তবে হাসিমুখে মেয়র পদ থেকে বিদায় নেব। আমি পাওয়ার জন্য আসিনি, দেওয়ার জন্য এসেছি। জীবন দিয়ে হলেও নগরবাসীর জন্য কাজ করতে দ্বিধা করব না। কিছুটা সময় লাগবে। উচ্ছেদের সময় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
সোমবার (৩১ জুলাই) ইঞ্জিনিয়াস ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সুধী সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
মেয়রের প্রতি চট্টগ্রাম নগরবাসীর প্রত্যাশা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাজ অত্যন্ত কঠিন ও চ্যালেঞ্জের।
নগরবাসীর প্রত্যাশার চাপ বেশি, শেষ নেই। এটি আমি এনজয় করি।
আমি এ নগরে যত সেবাদানকারী সংস্থা আছে তার মধ্যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। অন্যরা সরকার বা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তাই নগরবাসীর প্রত্যাশা আমার কাছেই বেশি।
সমালোচনাকে আমি ভয় পাই না জানিয়ে তিনি বলেন, ঢালাওভাবে সমালোচনা করা ঠিক নয়। সুনির্দিষ্টভাবে সমালোচনা করা প্রয়োজন।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে বিশেষজ্ঞদের অনুমানও কাজে আসছে না, জলাবদ্ধতা নিরসন সময়সাপেক্ষ বিষয়। এটি চ্যালেঞ্জিং কাজ।
কারণ সিডিএ ১৯৯৫ সালেযে মাস্টারপ্ল্যান করেছিল তাতে বলা হয়েছিল ৫০ বছর পর (২০৪৫ সাল) সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা হবে ৪ দশমিক ৮ মিটার। কিন্তু এবারই হলো ৪ দশমিক ৮৪ মিটার। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের কোনো অনুমান কাজে আসেনি।
খাল উদ্ধারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কে খাল দখল করেছে আমার বলার দরকার নেই। উনি তো জানেন। স্ব ইচ্ছায় সরে দাঁড়াতে পারেন। আরএসের ভিত্তিতে ডিজিটাল জরিপ করা হচ্ছে।
সমন্বয়ের অবশ্যই প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, সমন্বয় ছাড়া কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমি সমন্বয় করতে চাই।
জনগণ, নগরবাসী, মন্ত্রণালয় ও সরকারের প্রতি আমার জবাবদিহি আছে। আইনের কাঠামোয় থেকে জলাবদ্ধতাকে আমি টপ প্রায়োরিটি দিতে চাই।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, চসিকের কাজগুলো ইতিবাচকভাবে নগরবাসীর কাছে পৌঁছাচ্ছে না।
আমার মনে হয়, খোদ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগে প্রতিবন্ধকতার দেয়াল আছে। দুই বছরে নগরবাসীর প্রত্যাশা খুব বেশি পূরণ হয়নি।
চিটাগাং টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, আমাদের চাহিদা অনেক বেশি। ৩৭টি কাজের তালিকা দেখিছি।
ফোরকানিয়া মাদরাসার সম্পর্কে কিছু দেখিনি, যা আমাকে আহত করেছে। মেয়র অত্যন্ত দক্ষ লোক। আমার বিশ্বাস তিনি তাঁর প্রত্যেকটা প্রতিশ্রুতি ঠিক সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
দৈনিক চট্টগ্রাম মঞ্চ সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক বলেন, ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহে অতীতে কোনো মেয়র সাহস করেননি। কিন্তু সেবক নিয়োগে বড় ধরনের লেনদেন হয়েছে।
শিক্ষা বিভাগ হোঁচট খাচ্ছে, অসন্তোষ আছে। স্বাস্থ্য বিভাগে সুদৃষ্টি দিতে হবে। প্রকৌশল বিভাগে কাজের গতি স্থবির হয়ে পড়ছে।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বিমানবন্দর থেকে মূল শহরে আসতে বিদেশিদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ রুটে অবৈধভাবে যাতে গাড়ি পার্কিং করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাবেশে চসিকের একটি এ্যাপস উদ্বোধন করা হয়। এ্যাপসে চসিকের সব সেবা একটি সিঙ্গেল প্লাটফর্মে আনা হয়েছে।
মেয়রের একান্ত সচিব মঞ্জুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, সংসদ সদস্য সাবিহা মুছা, চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, দৈনিক চট্টগ্রাম মঞ্চ সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক, চিটাগাং টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী আব্বাস, চট্টগ্রাম প্রেসসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সাহাবউদ্দিন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরীসহ চসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাবৃন্দ ।