জাতির প্রতিটি অর্জনে বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী

0

নিজস্ব প্রতিবেদক::বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর ৮৭তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ২৫নং রামপুর ওয়ার্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় বিশিষ্ট সমাজসেবক ফরিদ মাহমুদ বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন এ জাতির প্রতিটি অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী। ১৯৪৭ সাল থেকে ৪৯ সাল পর্যন্ত তিন-চার বার, ভাষা আন্দোলনে ৫২ সনে একবার, যুক্তফ্রন্ট ভেঙে যাবার পর ৫৪ সনে একবার, আগরতলা ষড়যন্ত্রমামলায় ১৯৫৮ সনে এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাত্রীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। যখন রাজনীতির শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেফতার হন প্রথম ধকলটা যায় পরিবারের উপর। দীর্ঘ ২৪ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক সময়ে মহান নেতা বঙ্গবন্ধু বেশিরভাগ সময় বন্দী জীবন কাটান। গ্রেফতারের পরে নেতাদের পারিবারিক জীবনে যে বিপর্যয় নেমে আসে সেই বিপর্যয় সামাল দেন প্রথম তাঁর স্ত্রী। কারাগারে যোগাযোগ, মামলা-মোকাদ্দমা পরিচালনা, অর্থ যোগাড় করা, সংসার চালনা সবকিছুই তাকেই করতে হয়। অসীম ধৈর্যের অধিকারী বেগম মুজিব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে কখনো ভেঙে পড়েননি, সাহস হারাননি। ব্যক্তিগত সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের কথা কখনো তিনি চিন্তা করেননি।

গ্রেফতারকৃত অবস্থায় তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে সংগঠনের নেতা কর্মীদের মাঝে সেতুবন্ধনের কাজ করেন। বিভিন্ন আন্দোলনে সংগঠনের নেতাকর্মীর কাছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পৌঁছে দিতেন। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে আন্দোলন যাতে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না হয়, শীর্ষ নেতৃবৃন্দ যে লক্ষ্যচ্যুত না হয়, ছয়ষট্টির ছয় দফা আন্দোলনের সময় তাঁকে বিচক্ষণ ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। তখন সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছয় দফা নাকি আট দফা এ নিয়ে বিভ্রান্তির মাঝে ছিল। বঙ্গবন্ধু জেল হাজতে থাকাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতাদের পরিচালিত করতেও দেখা গেছে। ঢাকাসহ সারাদেশের আটক নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবরও তিনি নিয়মিত রাখতেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গবন্ধুকে অনেককে স্বাধীনতার ঘোষনার ব্যাপারে মানসিকভাবে চাপ দিয়েছিলেন। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছাকে বঙ্গবন্ধু প্রশ্ন করেছিলেন কি বলা যায়।

তিনি বলেছিলেন সারাদেশবাসী তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের কল্যাণের কথা ভেবে তুমি যা ভালো মনে করো তাই বলিও। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকলিন সময়ে অন্তরিন থাকা অবস্থায় অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে তিনি পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিক আন্দোলনের কালের স্বাক্ষী।

যে কারণে ৭১ এর পরাজিত শক্তি তাঁকে ভয় পেতেন। সে জন্য পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট ঘাতকরা তাঁকেও চিরতরে শেষ করে দেন। চক্রান্তকারীরা বঙ্গবন্ধুর রক্তকে ভয় পেতেন। যে কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বপরিবার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে ১৩ বছরের বেবি, ১০ বছরের শেখ রাসেল, আওরাফ, ৪ বছরের সুকান্তও রক্ষা পাননি ঘাতকের নির্মম বুলেট থেকে। উপরোক্ত কথাগুলো অনীক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেছেন।

সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: সালেহ উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক মো: ইউসুফ এর পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন ২৫নং রামপুর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ এরশাদ উল্ল্যাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ সদস্য সাইফুর রহমান পলাশ, শেখ নাছির আহমেদ, সংগঠনের নেতা মো: জাফর আহমেদ, মো: মুজিব দৌলা।

অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবলীগ নেতা মনজুরুল আলম রিমু, শ্রমিক লীগ নেতা মো: নুরুজ্জামান, যুবনেতা ইয়াছিন ভূঁইয়া, মাইনুল ইসলাম সেলিম, মো: মুছা, মো: ইসমাইল, বেলাল আহমেদ, মোবারক আহমেদ, মো: খলিল, মো: জাবের, মো: সাগর, আসলাম আহমেদ, মো: মহিউদ্দিন, আলহাজ্ব আবুল কাশেম কন্ট্রাক্টর, আবদুল হালিম, মো: তারেক, মো: ওসমান, মো: এরশাদ, মো: খোরশেদ, জনি আহমেদ, মো: সরওয়ার, মো: মাহমুদ, ছাত্রনেতা টিটু তালুকদার প্রমুখ। সভাশেষে উপস্থিত নারী-পুরুষদের মাঝে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চাল, ডাল, আলু, পেয়াজ বিতরণ করা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.