চট্টগ্রামে এক ডজন এমপির মনোনয়ন অনিশ্চিত
দিলীপ তালুকদার,সিটিনিউজ : আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রতিদিন সময় দিচ্ছেন। বিশেষ করে দলীয় মনোনয়নের একটি খসড়া তালিকা ইতিমধ্যে তৈরী করে ফেলেছেন।
সম্প্রতি আপিল বিভাগের রায় ও পর্যবেক্ষণ, লাগাতার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উৎকন্ঠাসহ নানা ঝুট ঝামেলার মধ্যেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ সমান গতিতে এগিয়ে চলেছে।
খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে চুলছেরা বিশ্লেষন করছেন।
নানাভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে প্রার্থী তালিকার খসড়া তৈরিতে। দলীয় সভানেত্রী দলের ব্যর্থ, বিতর্কিত, জনবিচ্ছিন্ন, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কহীণ, দূর্নীতিতে জড়িত সংসদ সদস্যদের আগামী নির্বাচনে তাদেরকে মনোনয়ন দিবেন না।
বাদ পড়া ওই আসনগুলোতে যাঁরা ভোট টানতে পারবেন, সাধারণ মানুষের কাছে যাঁদের গ্রহনযোগ্যতা ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আছে এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।
বেশ কিছু আসনে অধিকতর যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দিয়ে দলের বিজয়ের সম্ভাবনা বাড়াতে প্রার্থী পরিবর্তন করবে। আগমী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে এ চিন্তা মাথায় রেখে প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ একটি নির্বাচনে জয় সুনিশ্চিত করতেই এ পরিবর্তন আনবে।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এবার বৃহত্তর চট্টগ্রামে প্রায় এক ডজন সংসদ সদস্য মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়ে গেছেন।নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনে এম আব্দুল লতিফ, কক্সবাজার-৪ আসনের আব্দুর রহমান বদিসহ প্রায় এক ডজন এমপি এবার মনোনয়ন নাও পেতে পারেন।
এবার সাধারণ ভোটারদের পক্ষে টানতে পারবে এবং পরিচ্ছন্ন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে এটা নিশ্চিত।
এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও দলীয় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে কেউ এমপি আছেন বলে আগামীতে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে এমন কোন কথা নেই।
যাঁরা জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন, দলীয় কোন্দলে জড়িয়েছেন, সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা কমে গেছে তাদের এবার মনোনয়ন দেয়া হবেনা। তবে অনেক সময় তাদের বিকল্প প্রার্থীও পাওয়া যায় না। যেখানে ভালো প্রার্থী পাওয়া যাবে তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।
অনেক এমপি এমনভাবে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন যে তাদের পরিবর্তন না করলে ওই আসনগুলোই হারাতে হবে। তিনি আরো বলেন, কিছু আসন টার্গেট করে আমাদের কাজ করতে হবে। একটি প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনে যারা জয়লাব করবে তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।
যার জয়ের সম্ভাবনা আছে, বাস্তবতা আছে, মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা আছে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।
প্রার্থী যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নেত্রী সুশীল সসাজকে দায়িত্ব দেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে রিপোর্ট নেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন নেন এবং সর্বোপরী আমাদের দলের তৃণমূল থেকে মনোনয়ন প্রস্তাব নেন এগুলো সব চুলছেরা বিশ্লেষন করে প্রার্থীতা চুড়ান্ত করা হবে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে। এতে করে আগামী নির্বাচন হবে প্রবল প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। সে অনুযায়ী ছক কষে এগুচ্ছেন আওয়ামীলীগ। সেক্ষেত্রে দল জনপ্রিয়তা হারা বর্তমান এমপিদের বাদ দিতে দ্বিতীয়বার ভাববে না।