কান ধরে উঠবস, শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু!
সুজিত দত্ত, পটিয়া, সিটিনিউজ :: চট্টগ্রামের পটিয়ার মনসা স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। উক্ত শিক্ষার্থীর নাম মো: ফারুক। সে মনসা গ্রামের আবুল হোসেন মিয়ার পুত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনসা স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মো: ফারুক একজন শারিরিক প্রতিবন্ধী। সে প্রতিদিনের ন্যায় গতকালও স্কুলে যায়।
শেষ ঘন্টায় শারিরিক শিক্ষা ক্লাসে সহকারী শিক্ষিকা তাহেরা বেগম ক্লাসের সকল শিক্ষার্থীদেরকে পাঠ আদায় করতে না পারায় কান ধরে উঠবস করায়।
ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধী এ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলে তার সহকর্মী শিক্ষার্থীরা তাকে গতকাল রবিবার বিকেলে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মনসা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আলম ফারুকী বলেন, ৭ম ঘন্টা ছিল পাঠদানের শেষ পিরিয়ড। সে সময়ে গত রবিবার আমাদের শরীর চর্চা শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব পান সহকারী শিক্ষিকা তাহেরা বেগম।
তিনি শিক্ষার্থীরা পাঠ আদায় করতে না পারায় সবাইকে কান ধরে উঠবস করায় বলে আমি শুনেছি। তবে এরপরে ক্লাস ছুটি হলে সবার মত ছেলেটিও বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।
কিন্তু পথিমধ্যে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সহপাঠীরা পটিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মইনুদ্দিন মজুমদার বলেন, আমি বিষয়টি সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ জেনেছি। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে আমার অফিসে তলব করলে তিনি জানান, এককভাবে এ ছেলেটিকে কান ধরে উঠবস করানো হয়নি।
তবে প্রতিবন্ধী এ ছেলেটি শারীরিকভাবে দূর্বল ছিল এবং তার হার্টে ব্লক রয়েছে বলে তার পিতা জানিয়েছেন। তারপরও আমরা বিষয়টি আরো নিশ্চিত করতে সহকর্মী শিক্ষার্থীসহ সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ছেলেটির বাবা এবং মায়ের সাথেও কথা বলেছি। তারা বলেছেন, জন্মের পর থেকেই তাদের ছেলেটি প্রতিবন্ধী ছিল এবং হার্টের রোগে ভূগছিল।
তারা তাদের ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে কোন প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা বা মামলা করবেন না বলে জানিয়ে বলেন, তারা বিনা ময়না তদন্তেই ছেলের লাশ দাফন করতে চান।