আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে সিনেমা হলে নির্বিচার গুলি চালিয়ে ১২ জনকে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি জেমস হোমসকে আজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তার মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে কলোরাডোর অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতের জুরিবোর্ড একমত হয়ে না পারায় ২৭ বছর বয়সি হোমসকে এই দণ্ড দেন। কারাবাসের পুরো সময়ে হোমসকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যাবে না বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত। এমনকি প্যারেলে মুক্তি পাবেন না তিনি।
২০১২ সালের ২০ জুলাই মধ্যরাতে ওই কলোরাডোর ডেনভার শহরের একটি মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলে হলিউডের ব্যাটমান ছবিটি চলাকালে হোমস আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, শটগান ও পিস্তল নিয়ে প্রবেশ করে নির্বিচার গুলি চালান। এতে ১২ দর্শক নিহত ও ৭০ জন আহত হন।
ওই হত্যাকাণ্ডে তার বিরুদ্ধে আনা সবগুলো অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর গত মাসে হোমসকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রায়ে উল্লেখ করা হয়, হোমসকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে বিচারকেরা সর্বসম্মতভাবে একমত হতে পারেননি। জুরিবোর্ডের সদস্যরা কৌসুলিদের সঙ্গে একমত হয়েছেন উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, মানসিকভাবে অসুস্থ হোমস ওই কাজের জন্য দায়ী। তবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে তারা একমত নন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত নিউরোসায়েন্সে স্নাতক করা হোমসকে নির্বিকার দেখা যায়। রায় ঘোষণার পরও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি তিনি।
১২ জন বিচারকের মধ্যে নয়জন মৃতুদণ্ডের পক্ষে ছিলেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুরিবোর্ডের এক সদস্য পরবর্তী সময়ে জানিয়েছেন। বিচারকদের একজন মৃতুদণ্ডের বিপক্ষে ছিলেন ও অপর দুজন আজীবন কারাদণ্ডের পক্ষে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডেনভারের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবি জোরদার হয়েছিল। এসব কারণে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা মামলাটি আলোচিত ছিল।
কিন্তু একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। সিনেমা হলে হোমসের গুলিতে নিহত জেসিকা গাওয়ির মা স্যান্ডি ফিলিপস বলেছেন, ন্যায় বিচার হলো না।
ওই রায় ঘোষণার পর হোমসের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ওই সময় তিনি অজ্ঞানও হয়ে পড়েন। পরে হোমসের বাবা তাকে আড়কোল করে আদালত থেকে বাইরে আনেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি।