নেজামের কাঁধে দুটি ঝুড়ি : একটিতে বাবা-অন্যটিতে মা

0

আজহার মাহামুদ :: নেজামের কাঁধে দুটি ঝুড়ি । একটিতে বাবা, অন্যটিতে মা। বাবার বয়স ৯৬, মায়ের ৮৭। দুজনের কেউই চোখে দেখতে পান না, বেশিদূর হাঁটতেও পারেন না। তারা এপারে আসতেও চাননি।

যে ভূমির আলো বাতাসে যুগের পর যুগ কাটিয়েছেন সেখান থেকে কে আসতে চায়! তারা কেবল চাইছিলেন সন্তানকে এপারে পাঠিয়ে পুনর্জন্ম দিতে!

হয়তো অপরাধবোধও ছিলো, সন্তানদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে পারেন নি বলে। কিন্তু নিজাম তা মানতে পারছিলেন না।

বৃদ্ধ বাবা মায়ের কী হবে, কী করবেন নিজের ঈশ্বরদের! এসব ভাবতে ভাবতে দুইদিন কেটে যায়। হয়তো কিছুদিন পর স্বাভাবিকভাবেই তাদের মৃত্যু হবে।

এরপরও মিয়ানমার সৈন্যদের হাতে বাবা-মায়ের মৃত্যু যেনো না হয়, সেটাই চাইছিলেন নেজাম। যাঁরা তাঁকে জন্ম দিলেন তাঁদের মৃত্যুর মুখে রেখে কোনোভাবেই এদিকে পা এগুচ্ছিলো না।

কাকুতি মিনতির পর অবশেষে বাবা-মা রাজী হন। কিন্তু রাজী হলেতো শেষ নয়। দক্ষিণ মংডুর যেখানে নেজামদের বাড়ি, সেখান থেকে সীমান্ত অন্তত ৩৫ কিলোমিটার।

কোনো গাড়ি নেই। দুই পা-ই একমাত্র বাহন। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলেন, সে বাহনেই বাবা মাকে নিয়ে রওয়ানা হবেন।

ঘরের মালামাল নেয়ার ঝুড়িতে তুলে নিলেন বাবা মাকে। তারপর হাঁটা শুরু। সারাদিন হেঁটেছেন, রাতে জিরিয়েছেন।

পরদিন আবার হাঁটা শুরু। রাস্তা, জমি, পাহাড়, জঙ্গল, নদী পার হয়ে পাঁচদিন পর পৌঁছলেন বাংলাদেশে!

শনিবার(৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুতুপালংয়ে দেখা হয় নেজামের সাথে। পুত্রের বহন করা ঝুড়িতে তখনো ঘুমাচ্ছিলেন বাবা মা। বলছিলেন, এতোটুকু পথ পাড়ি দিয়েছেন তাতে তাঁর কোনো কষ্ট নেই।

বাবা-মাকে এখানে আনতে পেরেছেন, এটাই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। তথ্যসুত্র: আজহার মাহামুদের ফেসবুক পেইজ থেকে নেওয়া ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.