দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৃহত্তম জুলুছ আনোয়ারায়

0

জাহেদুল হক,আনোয়ারা : বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি ও অগ্রগতি কামনায় বিশেষ মুনাজাতের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার আনোয়ারায় অনুষ্ঠিত হলো জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)। জুলুছে লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শরিক হন। জুলুছটি হামদ, নাত, জিকির সহকারে উপজেলার অন্তত ১৫ কিলোমিটার এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

আহলে সুন্নত ওয়াল জামা’আত, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা, ছাত্রসেনা গত কয়েক বছর ধরে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন উপলক্ষে এই জুলুছের আয়োজন করে। এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় জশনে জুলুছ হিসাবে পরিচিত। আনোয়ারা ছাড়াও পটিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও আশাপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা এই জুলুছে যোগ দেন।

জুলুছে নেতৃত্ব দেন বারীয়া দরবারের পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ বদরুদ্দোজা বারী । প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন। উদ্বোধক ছিলেন ইসলামী চিন্তাবিদ ওষখাইন আলীনগর দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহ সুফী মাওলানা ইলিয়াছ রজা । বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা এস এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে মুফতি কাজী শাকের আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় জুলুছ পরবর্তী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মাওলানা জুলফিকার আলী চৌধুরী মুফতি বখতিয়ার উদ্দিন আল কাদেরী ।

বেলা ২টায় আনোয়ারা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে দুই শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে যাত্রা শুরু করে জুলুছ মালঘর, খাসখামা, সওারহাট আনোয়ারা, কালাবিবির দীঘি, সেন্টার, চৌমুহনিসহ গুরত্বপূর্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কালাবিবির দীঘি মোড়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এ সময় নবীপ্রেমী হাজার হাজার মানুষের জিকির, হামদ-নাতের সুমধুর ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা।

জুলুুুুছ কালাবিবির দীঘি মোড়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছেলে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য ছিল । সমাবেশে বিশেষ মুনাজাতে শামিল হন আনোয়ারা প্রেসক্লাব সভাপতি আনোয়ারুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোরশেদ হোসেন, নুরল আবছার তালুকদার, আনোয়ারা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল হক, সুমন শাহ, ডিএইচ মনসুর, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন সিদ্দিকী, মাষ্টার মুহাম্মদ এয়াকুব আলী, ডি.আই.এম. জাহাঙ্গীর আলম, মুজিবুর রহমান, মাষ্টার আবদুল হালিম, মাওলানা মুজিবুল হক চিশতী, আলহাজ্ব নাজিম উদ্দিন, প্রমূখ।

সমাবেশে দরবারে বারীয়ার পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ বদরুদ্দোজা বারী বলেন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শান্তি স¤প্রীতির জন্য বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত নাস্তিক্যবাদ। ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানোর পাঁয়তারার বিপরীতে সুন্নি ওলামা জনতা ও বুদ্ধিজীবীদের ইসলামের সূফিতাত্ত্বিক মানবতাবাদী দর্শন, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংগঠনিক উপায় তুলে ধরতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মাওলানা এম এ মতিন বলেন, মায়ানমারে সাম্প্রতিক মুসলিম রোহিঙ্গা নির্যাতন বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। সে দেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সকল প্রকার নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের কোনো মুসলমান বসে থাকতে পারে না। আমাদের সবাইকে এই গণহত্যার প্রতিবাদে আরও সোচ্চার হতে হবে।

তিনি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের প্রতি যে মানবিকতা দেখিয়েছে তা রোল মডেল হয়ে থাকবে। এখন কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তাদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

শাহ সুফী ইলিয়াছ রজা বলেন, ইসলামকে ধ্বংস করতে ইহুদিরা সারা বিশ্বে নানা ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রেও বিরুদ্ধে মুসলমানদেও সোচ্চার হতে হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.