পটিয়ায় আবদুল হাকিম হত্যা মামলায় ২ আসামী গ্রেফতার

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধি :: পটিয়ায় গত ৩০ শে নভেম্বর চাঞ্চল্যকর মাইক্রোবাস ড্রাইভার আবদুল হাকিম (৫৫) কে জবাই করে হত্যা করার ঘটনায় রুজুকৃত মামলার ২ আসামীকে রবিবার ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে পটিয়া থানা পুলিশ।

জানা যায়, পটিয়ার থানার ওসি শেখ নেয়ামত উল্লাহর নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর মাইক্রোবাস ড্রাইভার আবদুল হাকিম হত্যা মামলার এ দুই আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। সোমবার দুপুর ১২টায় পটিয়া থানার ওসি শেখ মো: নেয়ামত উল্লাহ এক সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার ২ আসামীকে গ্রেফতারের বিষয়টি তুলে ধরেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন মো: মাঈনুর রশিদ প্র: তানিম (২০) সে চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম কেশুয়া গ্রামের মো: হারুনুর রশিদের পুত্র ও মো: সাব্বির হোসেন (২২) সে পাবনা জেলার সাথিয়া থানার আটিয়া পাড়া মোতালেব প্রমাণিকের বাড়ী এলাকার মো: আবদুল আজিজের পুত্র।

সংবাদ সম্মেলনে ওসি শেখ মো: নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ছিনতাইকারী দল গাড়ি ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে গত ২৯ নভেম্বর লালদীঘি পাড়ে এসে জেলখানার সামনে থেকে ১১ হাজার টাকা দিয়ে নিহত আবদুল হাকিমের গাড়ীটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ভাড়া করে। ছিনতাইকারী দলের ৭ সদস্য প্রথমে চকরিয়া গিয়ে চা-নাস্তা খায়। এরপর রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার সুগন্ধা পয়ন্টে গিয়ে পরিকল্পনা করে যে, ড্রাইভারকে একটি নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে জবাই করবে। এ ধারাবাহিকতায় ঐ দিন রাত সাড়ে ১১ টায় কক্সবাজার থেকে তারা রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে পটিয়া উপজেলার খরনা মুজাফ্ফরাবাদ এলাকায় এসে গ্রেফতারকৃত তানিম ও ছিনতাই চক্রের আরেক সদস্য ড্রাইভারকে গলায় ছুরি ধরে ড্রাইভারকে সিট থেকে পিছনের সিটে নিয়ে আসে। তারপর ড্রাইভারকে তারা সিটের নিচে চেপে ধরে ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে।

এসময় ছিনতাইকারীর অপর ৪ সদস্য নিহত ড্রাইভারকে হাত-পা, মুখ সহ বিভিন্নস্থানে চেপে ধরে রাখে বলে গ্রেফতাকৃতরা সংবাদকর্মীদের জানান। খুনের ঘটনার সময় ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য গাড়ী চালানোর দায়িত্ব নেয়। গাড়ি চালিয়ে চলে আসার সময় পৌর সদরের পোষ্ট অফিস এলাকায় গাড়ীটি বালির মধ্যে আটকে গেলে তারা নেমে অনেক চেষ্টা করার পরও গাড়িটি ধাক্কা দিয়ে চালু করতে পারেনি। এরপর গাড়ী ছিনতাইকারীর ৭ সদস্য গাড়িটি রেখে একটি বাসযোগে নতুন ব্রীজ নেমে যার যার গন্তব্যস্থানে চলে যায়। এছাড়া ড্রাইভারের একটি মোবাইল ছিল। ছিনতাইকারীর এক সদস্য সে মোবাইলটিও নিয়ে যায় বলে ওসি জানান।

পটিয়া থানার ওসি আরো বলেন, মাইক্রোবাসের ড্রাইভার আবদুল হাকিমকে জবাই করে হত্যা মামলার ২ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমে মো: মাঈনুর রশিদ প্র: তানিমকে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মূলে ছিনতাইকারী আরেক সদস্য মো: সাব্বির হোসেনকে পাবনা জেলার সাথিয়া থানার আটিয়া পাড়া মোতালেব প্রমাণিকের বাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ২ জনকে গতকাল সোমবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হতভাগ্য ড্রাইভার আবদুল হাকিম (৫৫) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর এলাকার মৃত ছামির আহমদের পুত্র। সেদিন পটিয়া পৌরসদরের পোষ্ট অফিস এলাকা থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পটিয়া থানা পুলিশ। সে চট্টগ্রাম নগরীর বোল্লার দীঘির পাড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করত। গত ২৯ শে নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় আবদুল হাকিম মাইক্রোবাস চট্টমেট্টো-চ-১১-৪০১৬ কালো রঙের গাড়িটি নিয়ে কক্সবাজার ভাড়ায় যায়। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার সময় ছিনতাইকারী ৭ সদস্য তাকে জবাই করে হত্যা করে। ৩০ শে নভেম্বর নিহতের পুত্র পারভেজ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.