চকরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নতুন করে ৭ ইউনিয়ন প্লাবিত

0

বশির আলমামুন,চকরিয়া::অব্যাহত ভারী বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাসছে চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার বির্স্তীণ জনপদ। গতকাল বুধবার ভোরে ফের নতুন করে ডুবে গেছে উপজেলার উপকুলের বদরখালী, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, বিএমচর, পুর্ববড় ভেওলা, পশ্চিম বড়ভেওলা ও সাহারবিল ইউনিয়ন। এতে করে এসব ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দুর্গত জনপদের মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও পানীয় জলের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা বলেন টানা চারদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে এবং মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এখনো উপজেলার অন্তত ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিতে ভাসছে। দুর্গত জনপদের মানুষের ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেকে সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নিলেও বেশির ভাগ পরিবার চরম কষ্টের মাধ্যমে দিনযাপন করছে। সরকারি ভাবে দুর্গত মানুষের জন্য এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়নি। তাঁরা আরো বলেন, বসতঘরের টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্গত মানুষের মাঝে নিরাপদ পানীয় জলের তীব্র সংকট চলছে।

গতকাল বুধবার ভোরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে মাতামুহুরী নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে গেলে নদীর তীর উপচে লোকালয়ে বানের পানি ঢুকে পড়ে। এ অবস্থার কারনে ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

পশ্চিমবড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলা বলেন, টানা ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত তাদের এলাকার লোকজন দুর্ভোগমুক্ত ছিলো। তবে গতকাল বুধবার ভোরে ভারী বর্ষণের কারনে মাতামুহুরী নদীর পানি প্রচন্ড বেগে বেড়িবাঁধ ও স্লইচ গেইট টপকে লোকালয়ে প্রবেশ করে। এতেকরে উপকুলের বেশির ভাগ ইউনিয়নের নীচু এলাকা পানির সাথে একাকার হয়ে গেছে। তাঁরা বলেন, বানের পানিতে উপকুলের মানুষ জিন্মি হয়ে পড়েছে। দুর্গত এসব মানুষ পলিথিনের টাবু টাঙ্গিয়ে পরিবার সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়ক ও চিরিঙ্গা বদরখালী সড়কে। বর্তমানে দুর্গত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও পানীয় জলের হাহাকার চলছে।

সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সাহারবিল ইউনিয়নের নিচু এলাকা গত চারদিন ধরে তলিয়ে গেছে। ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার সকালে ভারী বর্ষণের ফলে আবারও পৌর এলাকার জনসাধারণ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আগেরদিন মাতামুহুরী নদীর পানির প্রবল ¯্রােতে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষেত্রপাল মন্দির এলাকায় ৬টি বসতঘর মাতামুহুরীর নদীর গর্ভে তলিয়ে গেছে। গতকালও পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের চরপাড়া গ্রামে কয়েকটি পাকা বসতঘর নদীতে তলিয়ে গেছে। এখনো পৌরসভার ভাঙ্গারমুখ, নামার চিরিঙ্গা, হালকাকারা, কাজিরপাড়াসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের অন্তত শতাধিক বসতঘর পানিতে ডুবে রয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, ভারী বর্ষণ এখনো অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার সকালের দিকে উপজেলার উপকুলের সাত ইউনিয়ন নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে দেড় লাখ টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। ওই টাকায় শুকনো খাবার চিড়া, চিনি ক্রয় করে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দুর্গত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.