সাীতাকুন্ড সী-বীচ ধ্বংস করছে বসুন্ধরা
চট্টগ্রাম অফিসঃ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সমুদ্রে নতুন গড়ে উঠা পর্যটন কেন্দ্র বাঁশবাড়িয়া সী-বীচটি যেন হঠাৎ করেই সারাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে ভ্রমণ পিয়াসুদের আগমনে মুখরিত হয়ে থাকতো উক্ত এলাকাটি। কিন্তু হঠাৎ করে এ সী-বিচের উপর চোখ পড়ে রাঘাব বোয়ালদের।
তাদের হাত থেকে রক্ষা করতে বাঁশবাড়িয়া ও গুলিয়াখালি সী-বিচকে আবারো পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সরকারি স্বীকৃতির দাবী জানিয়েছে সীতাকু- সমিতি চট্টগ্রাম। সীতাকুন্ড সমিতির সভাপতি মো: গিয়াস উদ্দিন জানান চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন করা হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সীতাকুন্ড প্রকৃতির হাতে গড়া নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক, সহস্রধারা ঝর্ণাসহ নতুন নতুন পর্যটন স্পট এর কারণে সীতাকুন্ড আজ দেশে বিদেশে পরিচিত এক নাম। সীতাকুন্ডে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাব্য সব প্রাকৃতিক উপাদান বিদ্যমান রয়েছে।
কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা পর্যটন স্পটগুলোর চেয়ে সীতাকুন্ড কোন অংশে কম নয়। ওই চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এখানে আসা দেশী-বিদেশী পর্যটকরা সীতাকুন্ডকে বাংলার দার্জিলিং বলে অভিহিত করেন। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ও মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শণার্থী আসেন এবং পিকনিক স্পট হিসেবেও উক্ত সী-বিচ বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
চিঠিতে সীতাকুন্ড উপজেলা পুরোটাই এখন পর্যটন এলাকা হিসেবে সু-পরিচিত উল্লেখ করে বাঁশবাড়িায়া ও গুলিয়াখালি সী-বিচকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করার দাবী জানানো হয়। সমিতির পক্ষে সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এ কে এম তফজল হক সাক্ষরিত চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, পর্যটন সচিব, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান, ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সীতাকুন্ড বরাবরেও।
সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন জানান, একটি চক্র পুরো সৈকত এলাকাটি দখল করার পাঁয়তারা করছে। গত বৃহস্পতিবার বিচে বেড়াতে আসা দুই কিশোরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রশাসনকে ব্যবহার সীতাকুন্ডের সম্ভাবনায় এই পর্যটন স্পটটিকে গলা টিপে হত্যা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তিনি ওই চক্রটির অন্যায় আব্দারের কাছে প্রশাসনকে কোন ভাবেই মাথা না করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য যে, সীতাকুন্ডের সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র বাঁশবাড়িয়া সী-বীচটি বন্ধ করতে বসুন্ধারা গ্রুপ উঠে পড়ে লেগেছে। তারা সাগর থেকে ড্রেজারেরর মাধ্যমে মাটি উত্তোলন করে প্রায় একশত ফুট গভীর করে পুকুর করেছে, যার ফলে সমগ্র বাঁশবাড়িয়া এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বসুন্ধরার কারণে একদিকে পুরো বাঁশবাড়িয়া যেমন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতে যাচ্ছে তেমনি একটি সম্ভাবনময় পর্যটন শিল্পেরও মৃত্যু ঘটলো।