২০১৯ সালে করদাতার সংখ্যা ৩০ লাখ: এনবিআর

0

সিটিনিউজবিডি :  ২০১৯ সালের মধ্যে করদাতার সংখ্যা ৩০ লাখে উন্নীত করতে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান সোমবার বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের আয়কর দিবস ও আয়কর মেলার বিভিন্ন কর্মকান্ড সম্পর্কে এ কথা জানান।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান জনসংখ্যার তুলনায় করদাতার সংখ্যা অনেক কম। তাই রাজস্বের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করতে আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে ই-টিআইএন ও করদাতার সংখ্যা ৩০ লাখে উন্নীত করতে কাজ করছি।

রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এনবিআর মনে করে চলতি অর্থ বছরে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে তা খুবই বাস্তবসম্মত। দেশবাসী ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা পেলে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোন সমস্যা হবে না।

আয়কর মেলা ও আয়কর দিবসের বিষয়ে নজিবুর রহমান বলেন, আয়কর আদায় বাড়াতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। আর এ উদ্দেশ্য নিয়ে এনবিআর জাতীয় আয়কর দিবস ও আয়কর মেলা উদযাপন করছে। করের পরিসর বৃদ্ধি করতে এবারই প্রথমবারের মতো ৮৬ উপজেলায় আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরো বলেন, আয়কর মেলায় সর্বোচ্চ পরিমাণ লোকজনকে সেবা দেওয়া হবে। এ জন্য এনবিআরের কর কর্মকর্তারা প্রস্তুত। মেলায় আয়করের বুথ ছাড়াও ভ্যাট, শুল্ক ও সঞ্চয় পরিদফতরের পৃথক বুথ থাকবে। এ সব বুথ থেকে যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন করদাতারা।

আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) আয়কর দিবস উপলক্ষে সকালে আয়কর র্যাীলী অনুষ্ঠিত হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত আয়কর দিবসের উদ্বোধন করবেন।

জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপনের পাশাপাশি ১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় শহরে সাতদিনব্যাপী আয়কর মেলার আয়োজন করে থাকে এনবিআর। তবে জেলা শহরে চার দিন, প্রথমবারের মতো ২৯ উপজেলায় দুদিন এবং ৫৭ উপজেলায় এক দিনের ভ্রাম্যমান আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

এ বছর দেশে প্রথম বারের মতো বিভাগীয় ও জেলা শহরের পাশাপাশি ৮৬ উপজেলায় একযোগে আয়কর মেলা উদযাপন হবে। ফলে ষষ্ঠ বারের মতো আয়োজিত এ বছরের আয়কর মেলা হবে এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ। রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত আয়কর মেলা শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উদ্ভোধন করার কথা রয়েছে।

রাজধানীসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরের পাশাপাশি যে ৮৬ উপজেলায় আয়কর মেলা উদযাপিত হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো- ঢাকা জেলার সাভার ও আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালীগঞ্জ, কালিয়াকৈর ও কাপাসিয়া, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর ও সাটুরিয়া, নরসিংদীর মাধবদী, পলাশ, মনোহরদি, রায়পুরা ও শিবপুর, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও টঙ্গীবাড়ী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও মকসুদপুর, রাজবাড়ীর পাংশা, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, ভাঙ্গা ও সদরপুর, মাদারীপুরের রাজৈর ও শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া, সীতাকুন্ডু, সাতকানিয়া, বোয়ালখালী ও আনোয়ারা, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাডিয়ার আশুগঞ্জ, ফেনীর দাগনভূঞা, কক্সবাজারের চকরিয়া ও টেকনাফ, সুনামগঞ্জের ছাতক, হবিগঞ্জের মাধবপুর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জ, নীলফামারীর সৈয়দপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, রংপুরের বদরগঞ্জ, দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ ও ফুলবাড়ী, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, শেরপুর ও গাবতলী, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, রাজশাহীর ভবানিগঞ্জ ও বাঘা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, পাবনার ঈশ্বরদী, সাথিয়া ও কাশিনাথপুর, নওগাঁর মহাদেবপুর, নাটোরের সিংড়া, পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও গলাচিপা, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি, ভোলার লালমোহন, ঝালকাঠির নলছিটি, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, যশোরের ঝিকরগাছা ও নোয়াপাড়া, বাগেরহাটের মংলা, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, নেত্রকোণার কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও হোসেনপুর, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ময়মনসিংহের ভালুকা ও মুক্তাগাছা এবং শেরপুরের নালিতাবাড়ি।

২০১০ সাল থেকে এনবিআর কর প্রদানে উৎসাহিত করতে আয়কর মেলা চালু করে। প্রথম দিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ওই মেলা আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে জেলা পর্যায়ে মেলা সম্প্রসারণ করা হয়। মেলায় বড় অঙ্কের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে কর তথ্য ও সেবা, ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয় ।

এবার ঢাকায় আয়কর মেলায় ১৭২টি বুথ থাকবে। এর মধ্যে বৃহৎ করদাতা, প্রতিবন্ধী, সিনিয়র সিটিজেন, মুক্তিযোদ্ধা ও মহিলাদের জন্য পৃথক বুথ থাকবে। ৫৬টি হেল্প ডেস্ক, সোনালী ও জনতা ব্যাংকের ছয়টি বুথ থাকবে। ব্যাংকের বুথের মাধ্যমে করদাতা তৎক্ষণাৎ কর পরিশোধ করতে পারবেন।

এছাড়া করদাতাদের সুবিধার্থে এ বছরই প্রথম আয়কর মেলায় শুল্ক, ভ্যাট ও জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের পৃথক বুথ থাকছে আয়কর মেলায়।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত মেলায় ১ হাজার ৬৭৫ কোটি ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫১ টাকার আয়কর আদায় করে এনবিআর। মেলায় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ করদাতাকে সেবা প্রদান করা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.