বিনোদন ডেস্ক : আজ উপ-মহাদেশের কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের ৮৫তম জন্মদিন। ১৯২৯ সালের এই দিনে বৃটিশ-ভারতের ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেন এই গায়িকা।
তবে নিজের জন্মদিন পালন করতে কখনও আগ্রহ দেখা যায়নি লতার মধ্যে। এটাকে কোন উৎসবই মনে করেন না তিনি। কিন্তু জন্মদিনে তার অগণিত ভক্ত সব সময়ই মুম্বইর বাড়িতে কেক-ফুলেল শুভেচ্ছা নিয়মিত পাঠিয়ে থাকেন। এ বিষয়টি দারুণ উপভোগও করেন তিনি। জন্মদিন পালন না করার জন্য প্রতিবারই তিনি মুম্বই ছেড়ে অন্য শহরে চলে যান। কিন্তু আজ বাড়িতেই কাটাবেন তিনি। কিন্তু জন্মদিনটি পালন করছেন না। তবে ভক্তরা ঠিকই তাকে আজ অসংখ্য সারপ্রাইজ গিফট দেবেন এটা ধারণা করাই যায়। অবশ্য তার আগে লতাই শ্রোতাদের একটি উপহার দিচ্ছেন। জন্মদিন উপলক্ষে নতুন একটি গান রেকর্ডিং করেছেন তিনি। গানটির সুর-সংগীতায়োজন করেছিলেন সলিল চৌধুরী। তবে সলিল চৌধুরীর মৃত্যুর ১৯ বছর পর এবার নতুন সংগীতায়োজনে গানটির রেকর্ডিং করেছেন লতা।
গানটি লতার পক্ষ থেকে ভক্ত-শ্রোতাদের জন্য তার জন্মদিনের উপহার। অনেক ছোটবেলা থেকেই গানের চর্চা শুরু করেন লতা। খুব অল্প বয়সেই খ্যাতিও পেয়ে যান। তবে চর্চা কখনও ছাড়েননি তিনি। গানের প্রতি প্রচণ্ড ভালবাসা ও পরিবারের উৎসাহেই প্লেব্যাকে জনপ্রিয় থাকা অবস্থাতেও তিনি সংগীতচর্চা চালিয়ে যান। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে একজন পেশাগত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে দেখতে হয়নি তাকে। গেয়েছেন হাজারও গান। এখন পর্যন্ত প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে অসংখ্য হিট সুপারহিট গান তিনি উপহার দিয়েছেন শ্রোতা-দর্শককে। ভারতের ইতিহাসে সর্বাধিক সফল নারী প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে ধরা হয় লতা মঙ্গেশকরকে। নিজের সুরেলা কণ্ঠের মাধ্যমে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে ১৯৫০ সাল থেকে সারা বিশ্বের শ্রোতাদের মুগ্ধ করে আসছেন তিনি।
এক হাজারেরও বেশি হিন্দি ছবির গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। হিন্দিসহ প্রায় ৩৬টি ভাষায় তিনি এখন পর্যন্ত গান গেয়েছেন, যা একটি বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে। ১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গান গেয়ে লতা মঙ্গেশকরের নাম ওঠে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। এই সময়ে তিনি ২০টি ভাষায় ২৫০০০-এরও বেশি গানে কণ্ঠ দেন। এ রেকর্ডটি ২০১১ সালে ভেঙে দেন তারই ছোট বোন আশা ভোসলে। সংগীতের ইতিহাসে সর্বাধিক গানে কণ্ঠ দেয়ার গৌরব অর্জন করে গিনেস বুক অব রেকর্ড ওয়ার্ল্ডে নাম লেখান আশা। তবে আশা নিজেও তার সংগীতের অনুপ্রেরণা হিসেবে সব সময় বড় বোন লতাকেই মানেন। আরডি বর্মন, এসডি বর্মন থেকে শুরু করে এখনকার অনু মালিক ও যতিন-ললিতদের মতো সংগীত পরিচালকদের সঙ্গেও সমান তালে কাজ করেছেন লতা।
তবে বর্তমানে তেমন একটা গান গাইছেন না তিনি। খুব পছন্দসই কোন প্রস্তাব পেলে নিজের সুরেলা কণ্ঠের জাদু ছড়ান। পেয়ার কিয়াতো ডারনা কেয়া, আজিব দাসতা হে ইয়ে, কাহি দিল জালে কাহি দ্বীপ, আজারে পারদেশী, আপকি নজরোসে সামঝা, লাগজা গালে, ন্যায়না বারসে রিমঝিম, তুঝে দেখাতো ইয়ে জানা সনম, মেরে জীবন সাথি, শিশা হো ইয়া দিল হো, নদীয়া কিনারে, আভি তো ম্যায় জাওয়ান হু, ধীরে সে আজা রে, রাত ভি কুচ হ্যায়, হামকো হামিসে চুরালো, কাভি খুশি কাভি গাম, ভিরজারাসহ লতার কণ্ঠে রয়েছে আরও অসংখ্য জনপ্রিয় গান।