কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড:: চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুন্ড আসনের সাবেক সাংসদ ও সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এ বি এম আবুল কাশেম(৭৭) মঙ্গলবার বিকাল ২.৩৫ মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃস্বাশ ত্যাগ করেছেন (ইন্নাল্লিলাহে.. .. রাজিউন)।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি রোগ সহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার ছেলে এবং এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। তাঁর মৃত্যুতে সীতাকুণ্ডের সর্ব্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি জাতীয় সংসদের ২ বার নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন।
সাংসদ থাকাকালীন সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন । তাঁর বড় ছেলে আলহাজ্ব এস এম আল মামুন সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবলীগের সভাপতি। তাঁর ছোট ভাই সিআইপি আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লায়ন আসলাম চৌধুরী এফসিএ,জাতীয় পার্টি চট্ট্রগাম উত্তর জেলার সভাপতি ,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম বাচ্চু, পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সফিউল আলম, সবেক পৌরময়র মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আযাদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এড.মোস্তফা নুর। উত্তরজেলা কৃষক দলের সভাপতি ইসহাক কাদের চৌধুরী, সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তফাজ্জল হোসেন, সীতাকুন্ড প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এম হেদায়েত, যুগ্ম আহ্বায়ক সেকান্দর হোসাইন,অনলাইন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সদস্যসচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিএসসি প্রমুখ।
বুধবার সকাল ১০.০০ টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদে যোহর সীতাকুন্ড সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২য় জানাজা এবং বাদে আছর নিজ বাড়ীতে ৩য় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন উনার বড় ছেলে সীতাকুণ্ডের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম আল মামুন।
তিনি ১৯৪০ সালে সীতাকুণ্ডের দক্ষিণ ছলিমপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। পিতার নাম মরহুম আব্দুল জলিল, মাতার নাম মরহুমা আমেনা বেগম। চট্টগ্রামের কাট্টলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা দিয়ে শুরু হয় জীবনযাত্রা। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঐ সময় চট্টগ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ছিলেন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনসহ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা পত্রটি ছলিমপুর ওয়ারলেস সেন্টারে আসলে অপারেটর আব্দুর গাফ্ফারের সহযোগিতায় সাবেক মন্ত্রী এম আর সিদ্দিকী ও জহুর আহম্মদ চৌধুরীর নিকট হস্তান্তর করেন। ১৯৭৫ সালে সীতাকুন্ড আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের তিনি হাল ধরেন। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চার বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেন। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ২ বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।ঐ সময় স্পীকারের অনুপস্থিতিতে সফলভাবে স্পীকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বর্ণাঢ্য এই রাজনৈতিক ব্যক্তির সীতাকুণ্ডের ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।