ফজলুল কবির চৌধুরী: সংগীতে যার অবাধ বিচরণ

0

ইকবাল ভূঁইয়া  – 

ফজলুল কবির চৌধুরী এ সময়ে জনপ্রিয় শিল্পী সুরকার ও সংগীত পরিচালক। দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সময় তিনি গান গাইছেন। সংগীত তার ভালবাসা। সুরেলা কন্ঠে গান গেয়ে তিনি অসংখ্য সংগীত অনুরাগী মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন, গড়ে তুলেছেন ভালবাসার এক সেতু বন্ধন, সংগীত শিল্পী ও সুরকার হিসাবে সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান, ফজলুল কবির চৌধুরী একজন পরিপূর্ণ গানের মানুষ। তার সংগীত জীবনে পদার্পনের পর যারা সবচেয়ে বেশী সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে তিনজন ব্যক্তির নাম তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেছেন। বিশিষ্ট কন্ঠ শিল্পী আব্দুল মান্নান রানা, মাসিক আন্দরকিল্লার সম্পাদক মোঃ নুরুল আবসার ও গীতিকার এম.রুস্তম আলী। ফজলুল কবির চৌধুরী ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে সংগীত শিল্পী হিসাবে এবং ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংগীত পরিচালক হিসাবে তালিকাভূক্ত হন। ফজলুল কবির চৌধুরীর সুর ও সংগীতে গান গেয়েছেন বাংলাদেশের অনেক তারকা ও প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিল্পীরা। ২৫০’র অধিক মৌলিক গানের সুর করেছেন বর্তমানে আলোচিত সুরকার ফজলুল কবির চৌধুরী। বিটিভি’র তালিকাভূক্ত এই সুরকার বর্তমান সময়ে অডিও এ্যালবামের সংগীত নিয়ে কাজ করছেন।

তার সুরেলা কন্ঠে ১০টি মৌলিক গানের অডিও এ্যালবাম অচিরেই প্রকাশিত হবে ঢাকাস্থ একটি খ্যাতনামা অডিও প্রতিষ্ঠান হতে। সংগীত গুরুমুখী বিদ্যা- এই কথাটি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন শিল্পী ও সুরকার ফজলুল কবির চৌধুরী। সংগীত জগতে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শাস্ত্রীয় তথা ক্লাসিক্যাল সংগীতের গুরুত্ব অপরিসীম। শৈশবেই বাবুল আচার্যের নিকট ফজলুল কবির চৌধুরীর সংগীতে হাতে খড়ি। শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নিয়েছেন ননী গোপাল আচার্য্য ও নীরদ বরণ বড়ুয়ার কাছে। ফজলুল কবির চৌধুরীর পুরো পরিবারই সংস্কৃতি অনুরাগী। ছেলে বেলায় তিনি দেখেছেন তাদের গ্রামে নাটক মঞ্চস্থ হতো। সংগীতই ছিলো মঞ্চ নাটকের অন্যতম প্রাণ। মূলত তখনই ফজলুল কবির চৌধুরী সংগীত চর্চায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন। বর্তমান সময়ে তিনি দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিল্পী ও সুরকার। সংগীত পরিচালনায় মানুষের জীবনে কর্মপ্রেরণা হলো সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। ফজলুল কবির চৌধুরীকে সংগীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বন্ধুবর নাছির চৌধুরী, জাফর চৌধুরী, ছালে আহমেদ চৌধুরী অফুরন্ত প্রেরণা যুগিয়েছেন। ছেলে বেলার এ সকল বন্ধুকে ফজলুল কবির চৌধুরী খুব মিস করেন। বন্ধুদের জন্য স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন।

হাই স্কুলে অধ্যায়নকালে শাহীন চৌধুরী, জয়নাল আবেদিন জুনু, জামাল উদ্দিন। গান গাইতে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন ফজলুল কবির চৌধুরীকে। কৃতজ্ঞতার সাথে সকলের কথা মনে রেখেছেন তিনি। সহধর্মিনী শিরিন কবির চৌধুরী ও একমাত্র পুত্র সন্তান তাসরিফ চৌধুরী শ্রাবন কে নিয়ে শিল্পী ফজলুল কবির চৌধুরীর সুখের সংসার। তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট মনে প্রাণে প্রার্থনা করেন ছেলে তাসরিফ চৌধুরী শ্রাবন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একজন ভাল মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, সিটিভি পূর্ণাঙ্গ অনুষ্ঠান কেন্দ্রে রূপ নেবে এটা বহুল প্রত্যাশিত ও সময়ের দাবী, সংগীত অভিনয়সহ চট্টগ্রামের পারফরমাররা জাতীয় সাংস্কৃতিক ভূবনের অন্যতম চালিকা শক্তি, তবে আশার কথা সিটিভি শীঘ্রই ৬ ঘন্টার অনুষ্ঠান সম্প্রাচারে যাচ্ছে এতে চট্টগ্রামের নবীন পারফরমাররা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রতিভা বিকাশে সক্ষম হবে। পেশাগত কারণে শিল্পী সুরকারদের সাথে গীতিকারদের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক, মূল্যায়নে তিনি বলেন- চট্টগ্রামের গীতিকারদের মধ্যে ডা. গোলাম মোস্তফা, এস.এম. খুরশিদ, জহুরুল ইসলাম, অধ্যাপিকা ডা. খোদেজা খুরশিদ অপরাজিতা, লিয়াকত হোসেন খোকন, আবছার উদ্দিন অলি, ফারুক হাসান, এস.আনিস আহমেদ বাচ্চু, বাবুল আচার্য্য, এম রুস্তম আলী, ইফতেখার সাদী প্রমুখ, এ সকল খ্যাতিমান গীতিকার জাতীয় সংগীত ভূবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। ভালো কিছু করার প্রত্যয়ে সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মে ফজলুল কবির চৌধুরী সবসময় আপোষহীন। তিনি চট্টগ্রামের গীতিকার ও শিল্পীদের নিয়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা মোতাবেক বেতার ও টিভিতে ভালো মানের সংগীতানুষ্ঠান পরিচালনা করার চিন্তা-ভাবনা করছেন। ফজলুল কবির চৌধুরী সংগীত চর্চা ও সাধনায় এগিয়ে যাক সুন্দর আগামী পথে। যেখানে সৃষ্টি হবে নতুন নতুন গানের চমকপদ সম্ভার।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.