পাঞ্জাবের বিমানঘাঁটিতে ফের হামলা

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ভারতের পাঞ্জাবের উত্তরাঞ্চলে দেশটির পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে ফের বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর (এনএসজি) অন্তত তিন জওয়ান আহত হয়েছেন।

শনিবার (২ জানুয়ারি) ভোরে ওই বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার হামলার একদিন পর রোববার (৩ জানুয়ারি) সকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান চলাকালে এ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের সময় বিমানঘাঁটির ভেতর থেকে গুলির শব্দও শোনা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রোববার সকালে যৌথ অভিযান চলাকালে বিমানঘাঁটির ভেতর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। একইসঙ্গে গুলির শব্দও শুনতে পান স্থানীয়রা। এ বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনায় তিন জওয়ান আহত হলেও কারও নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সেনা ও বিমানবাহিনী মনে করছে ঘাঁটিতে ছয় জঙ্গি হামলা করেছে। এরমধ্যে পাঁচ হামলাকারী ১৭ ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও ষষ্ঠ হামলাকারী ভেতরে লুকিয়ে থাকতে পারে বলে খবর ছড়াচ্ছে। ওই জঙ্গিকে ধরতে এবং বিমানঘাঁটি নিরাপদ বলে নিশ্চিত করতেই দ্বিতীয় দিনেও অভিযান অব্যাহত রেখেছে যৌথ বাহিনী। তাদের অব্যাহত অভিযানের মধ্যেই এ বিস্ফোরণ ও গুলির খবর এলো। যদিও অভিযানে কোনো সন্ত্রাসীর আটক হওয়া বা এ সংক্রান্ত কোনো খবর জানা যায়নি।

এদিকে, জঙ্গি হামলায় আহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিরঞ্জন নামে সেনাবাহিনীর আরও এক সদস্য নিহত হয়েছেন। রোববার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ নিয়ে হামলায় সেনাবাহিনীর নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো সাতে।

যৌথ বাহিনী জানিয়েছে, অভিযানে বিমানঘাঁটি থেকে জঙ্গিদের ব্যবহৃত ট্র্যাকিং ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্তে পাঠানকোটে পৌঁছেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) আট সদস্যের একটি দল।

শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে সেনা পোশাক পরে ওই বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। তৎক্ষণাৎ তাদের প্রতিরোধে অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী। প্রায় ছয় ঘণ্টা অভিযানের পর সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গুলি বিনিময় বন্ধ হয়। এরপর বিমানঘাঁটিতে শুরু হয় চিরুনি অভিযান। এ অভিযান চলাকালেই স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১১টার দিকে সেখানে গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এর পরপর গ্রেনেড বিস্ফোরণেরও আওয়াজ পাওয়া যায়।

শনিবার সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, বিমানঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর চার সদস্য ও চার হামলাকারী নিহত হয়েছেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর বিমান বাহিনীর আরও দুই সদস্য নিহত হন। অভিযানে নিহত হন পঞ্চম হামলাকারীও।

হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানকোট ও এর আশেপাশের এলাকায় ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করে। সেইসঙ্গে পাঞ্জাব ও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হঠাৎ পাকিস্তান সফরের কয়েকদিনের মধ্যেই এ হামলার ঘটনা ঘটলো। গত ২৫ ডিসেম্বর মোদি কয়েক ঘণ্টার জন্য পাকিস্তান সফরে যান। মোদির এ সফরের মাধ্যমে প্রায় এক যুগ পর কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পা পড়ে পাকিস্তানের মাটিতে।

সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানভিত্তিক জেইশ-ই-মোহম্মদ (জেইএম) সংগঠনের সদস্যরা এ হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। হামলাকারীদের সবাই পাকিস্তানের ভাওয়ালপুরের বলেও জানানো হয়েছে খবরে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.