জুয়েল, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। শাস্ত্র মতে, প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। বিদ্যাদেবীর কৃপালাভের আশায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ঘরে ঘরে শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এই পূজা উদযাপিত হচ্ছে।
ধর্মীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও জ্ঞানদাত্রী দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ঢোল-বাঁশি বাজিয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে উৎসব সহকারে নগরীর বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দেবীর প্রতিমা। স্বরস্বতী পূজাকে কেন্দ্র করে পুরো নগরীতে উৎসবের আমেজে মুখর।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে শুক্রবার সকাল থেকেই এই তিথি আরম্ভ হয়েছে। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবারও দেবীর আরাধনা হবে। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী দেবীর আরাধনা করেন।
সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্র বসনা। দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এজন্য তাকে বীণাপানিও বলা হয়। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জ্ঞান ও বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী তার আশীর্বাদের মাধ্যমে মানুষের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করতে প্রতি বছর আবির্ভূত হন ভক্তদের মাঝে।
নগরীর পাড়ায় পাড়ায়, অলিগলিতে পূজামণ্ডপে পূজার্থীরা মায়ের পাদপদ্মে অঞ্জলি দিয়েছেন। দেবীর সামনে ‘হাতেখড়ি’ দিয়ে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা হয়েছে অনেক স্থানে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ, সিটি কলেজ, কমার্স কলেজ, কলেজিয়েট স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে। রামকৃঞ্চ মিশন, জেএম সেন হলসহ বিভিন্ন মঠমন্দিরে পূজা উপলক্ষে বর্ণিল সাজসজ্জা করা হয়েছে।
এছাড়া বেশকিছু মণ্ডপে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূজার্থীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঘরে ঘরে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।