আফগানিস্তানকে ২০৯ রানের টার্গেট বাংলাদেশের

0

সিটিনিউজবিডি : আফগান স্পিনারদের সামলাতে না পেরে বিপদে পড়া বাংলাদেশ মোসাদ্দেক হোসেনের দৃঢ়তাভরা ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ২০৯ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে।

অভিষেক ম্যাচে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন ৪৫ রানে অপরাজিত থাকা এই তরুণ অলরাউন্ডার।

বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চার বল আগে অলআউট হওয়ার আগে ২০৮ রান করে বাংলাদেশ।

অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবিকে দিয়ে এদিন বোলিং আক্রমণ শুরু করে আফগানিস্তান। নতুন বলে পেসার দৌলত জাদরানও আঁটসাঁট বোলিংয়ে বেঁধে রাখেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারকে।

শুরুর সতর্ক ব্যাটিংয়ে ১০ ওভার নিরাপদেই কাটিয়ে দেন বাংলাদেশের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। বিপত্তিটা হয় এর পরেই। মিরওয়াইস আশরাফের পরপর দুই ওভারে বাজে শট খেলে ফিরে যান তামিম ও সৌম্য।

শর্ট বলে চড়াও হতে গিয়ে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন তামিম। রানে ফেরার লড়াইয়ে থাকা সৌম্য অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে কাভারে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেন।

৫ রানের ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যানকে হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে। ইমরুল কায়েস বাদ পড়ায় তিনে উঠে আসেন মাহমুদউল্লাহ, চারে খেলেন মুশফিক।

মুশফিক ক্রিজে আসতেই দুই প্রান্তে লেগ স্পিনার নিয়ে আসেন আফগান অধিনায়ক। তবে তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক।

দুই জনের দৃঢ়তায় এক সময়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২ উইকেট ১১১ রান। সেখান থেকে এক ধসে ৪০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা।

ধসের শুরু ৬১ রানের জুটি ভেঙে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে। পেসার নাভিন উল হকের স্টাম্পের বাইরের বল টেনে এনে বোল্ড হন তিনি।

এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি মুশফিকও। লেগ স্পিনার রহমত শাহর বলে সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ৩৮ রান করা এই ব্যাটসম্যান।

বাংলাদেশের দুই ভরসা সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমান ফিরেন আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে।

জীবন পাওয়ার পর নবির সেই ওভারেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সাকিব। টিভি রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের কানায় লেগেছিল বল।

রশিদের লেগ স্পিনে আবার বিদায় হন সাব্বির। প্রথম ম্যাচের মতো এবার গুগলিতে বিতর্কিত এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন তিনি। টিভি রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে বল তার ব্যাটের কানায় লেগেছিল।

উইকেটে বল একটু থেমে আসছিল। বল খানিকটা ঘুরছিল। নিয়মিত উইকেট পতনের মধ্যে দুর্বোধ্য হয়ে উঠছিলেন আফগান স্পিনাররাও। বিশেষ করে গুগলি বুঝতে খুবই সমস্যা হচ্ছিল ব্যাটসম্যানদের।

ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমে দলকে ভীষণ বিপদে দেখেন মোসাদ্দেক। এই তরুণের ওপর চাপ কমাতে গিয়ে আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সফল হননি, নবির বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি।

তাইজুল ইসলামের কাছ থেকে কিছুটা সঙ্গ পান মোসাদ্দেক। ঠাণ্ডা মাথায় দলের সংগ্রহ যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়ার দিকে ছিল তার মনোযোগ। জুটিটা সবে জমে উঠছে এমন সময়ে রশিদের ফ্লিপারে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তাইজুল।

পরের বলে আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তাসকিন আহমেদকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রশিদ। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া রুবেল হোসেন খেলেন ছোট্ট কিন্তু কার্যকর এক ইনিংস।

সাত নম্বরে নামা মোসাদ্দেক ছোট্ট ইনিংসেই দেখিয়েছেন নিজের টেম্পারমেন্ট-সামর্থ্যের প্রমাণ। নিজে খেলেছেন, খেলিয়েছেন ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান রুবেলকে।

স্কুপ করে ছক্কা, কাট করে চারে গ্যালারিতে থাকা ভক্তদের জাগিয়ে তোলেন মোসাদ্দেক। ৪৯তম ওভারে দৌলতের শর্ট বলে পুল করে যে ছক্কা হাঁকান সেটি ইনিংসেরই সেরা শট। সেই শটেই দুইশ’ পার হয় বাংলাদেশের সংগ্রহ।

শেষ ওভারে রুবেল রান আউট হওয়ার আগে দশম উইকেটে তার সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। ওয়ানডেতে নিজের প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন এই তরুণ। তার ৪৫ বলের ইনিংসটি গড়া ৪টি চার ও দুটি ছক্কায়।

৩৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের সেরা বোলার রশিদ। দুটি করে উইকেট নেন নবি ও আশরাফ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.