ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত,শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

0

চন্দনাইশ প্রতিনিধি : উপজেলার চামুদরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এক শিক্ষক ইসলামের ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত হানায় স্থানীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সেই সাথে শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে চাকুরীচ্যুত করার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর উপজেলার বরকলস্থ চামুদরিয়া ইউনাইটেড ইনিষ্টিটিউট উচ্চ বিদ্যালয়ের হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক স্বপন কান্তি চৌধুরী ইসলাম ধর্মের অনুভুতির উপর আঘাত হানে। ঐ দিন ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে তৃতীয় ঘন্টায় চারুকারু ক্লাস নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় এক শিক্ষার্থীর আঁকা ছবিতে মুয়াজিনের আযানের দৃশ্য তার উপর আল্লাহু লেখা রয়েছে। এ ছবিটি দেয়ালে দেখে মাষ্টার স্বপন ছিড়ে ফেলে এবং ফেলে দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের বলে, এতে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে। পরবর্তীতে বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্যালয় ছুটির পর মাষ্টার স্বপন তার বাসায় যাওয়ার পথে কিছু লোক তাকে আটক করে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসে এবং তাকে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আবদ্ধ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের সহযোগিতায় তাকে বাড়িতে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গত ২৪ অক্টোবর বিকেলে স্থানীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত-বরকল ও শোভনদন্ডির যৌথ উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল পাঠানদন্ডি এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য নাসির উদ্দীন সিকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, শিক্ষক স্বপন চৌধুরী ৬ষ্ট শ্রেণীর চারুকারু ক্লাসের দেয়ালে টাঙানো আল্লহু সম্বলিত কাগজটি ছিড়ে ফেলে এবং পায়ের নীচে দেয়। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে। এসময় তিনি কাগজটি বাথরুমে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বলেও জানান। সেই সাথে উক্ত ক্লাসের হিন্দু, বড়–য়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই তথ্য পেয়েছেন বলে জানান।

অপরদিকে প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার চৌধুরী বলেছেন, তিনি বিদ্যালয়ে ছিলেন না। বিদ্যালয়ের কাজে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে ছিলেন। তবে তিনি ঘটনা শুনেছেন বলে জানান। গতকাল ২৫ অক্টোবর পরিচালনা পরিষদের সভা আহবান করা হয়েছে। সেখানে শান্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেছেন, তিনি জাতীয় সম্মেলনের কারনে ঢাকায় রয়েছেন। বিষয়টি শুনেছেন, তবে গতকাল ২৫ অক্টোবর সকাল ১০টায় পরিচালনা পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে সভার মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে জানান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু কাউসার বলেছেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন, প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গতকাল ২৫ অক্টোবর পরিচালনা পরিষদের সভায় একটি শান্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এ ব্যাপারে শিক্ষক স্বপন কুমার চৌধুরীর সাথে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া গত ২৪ অক্টোবর তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক নিজেই।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.