জনগণ গণতন্ত্রের সুফল পাচ্ছে না : কর্নেল অলি

0

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ : লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, প্রাক্তন মন্ত্রী আলহাজ্ব ড. কর্নেল (অব:) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, হজ্ব করে, টেলিভিশনে বসে মিথ্যা বলে জাতিকে বিভ্রান্তি করা হচ্ছে। ফলে দেশের কল্যাণ হচ্ছে না। অনেকেই রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম শহর, ঢাকাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগেরা নেতারা যেভাবে টেন্ডারবাজী করে যাচ্ছে, ফলে রাজনীতি ব্যবসায় পরিনত হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সরকারের লোক জড়িত না থাকলে তা কোনভাবে সম্ভব হতো না। ৮১ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে, দেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বাংলাদেশের গভর্ণর ড. আতিউর রহমান টাকা পাচারকারীদের নাম প্রকাশ করার কথা বললেও তা প্রচার করেনি। আর এ টাকাগুলো দেশের হতদরিদ্র, মেহনতি, রিক্সাচালক, দিনমজুর, শ্রমিকের জমানো টাকা। এখন দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র ৩২ নম্বরে বন্ধ হয়ে থাকায় জনগণ গণতন্ত্রের সুফল পাচ্ছে না। সরকারি কিছু পুলিশ কর্মকর্তা এবং সিভিল সার্ভিসের মুষ্টিমেয় কিছু কর্মকর্তা দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে। সরকারি কর্মকর্তাদের এবং সরকারের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের জবাবদিহিতা না থাকায় গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত হচ্ছে, মানুষ অন্যায়, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে।

গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা, দুদকের কার্যক্রম, ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর দিয়ে চলছে, মানুষ অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। বিগত আড়াই বছরে ২শ ৮০ জন গুম হয়েছে। তাদের ধর্মীয় রীতি-নীতি অনুযায়ী দাফন-কাপন, এমনকি অন্য ধর্মের লোকদের সৎকারও হয়নি। কারণ বিগত নির্বাচন একদলীয় নির্বাচন হওয়ায় এ অবস্থা চলছে দেশে। বর্তমান আ’লীগ এরশাদকে নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আমরা এবং তারা এরশাদকে স্বৈরাচারী শাসক বলেছিলাম। ১৯৮৭-৮৮ সালে জামায়াতকে নিয়ে আ’লীগ নির্বাচন করেছিল, ১৯৯৫-৯৬ সালে বিএনপি’র বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল। তারা আমাদেরকেও কোমর ভেঙ্গে দিয়েছিল। ঠিক এরশাদকেও সময় পেলে কোমর ভেঙ্গে দেবে এবং তাদের জোট থেকে বাদ দেবে। দেশ চালানোর জন্য দরকার ধর্মীয় অনুভুতি এবং সততা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। আ’লীগের সরকারে অনেক নেতাই যুদ্ধকালীন সময় কোথায় ছিল সবাই জানে। কিন্তু তারা এখন মুক্তিযোদ্ধার কথা বলে বড় বড় পদ দখল করে রেখেছেন।

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিল বলেই সেদিন এদেশের স্বাধীনতাকামী লোকজন উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। আর তাঁকেই মুক্তিযোদ্ধা নয় বলে দাবী করছেন আ’লীগের নেতা-কর্মীরা। তিনি বলেন, আ’লীগের লাঠি-লগি-বৈঠা দিয়ে দেশ স্বাধীন করা সম্ভব হয়নি। আমরা সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। স্বাধীন দেশে নিরাপদ, অর্থনীতি, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, সমান অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি প্রতিষ্ঠিত হলেই দেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এসআই, নার্স এমনকি পিয়ন পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়ে যায়, যোগ্যতা লাগে না। সামাজিক অস্থিরতার জন্য সরকারই দায়ী। সংবাদপত্র, টেলিভিশন দিক নির্দেশনা দেয়ার একমাত্র মাধ্যম। সেখানেও তাদের প্রভাবমুক্ত নয়। জাতীয়ভাবে সরকারের সমালোচনা করাটাই এখন বিপদজনক হয়ে দাড়িয়েছে।

গতকাল ১০ ডিসেম্বর বিকালে উপজেলা গণতান্ত্রিক যুবদলের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন চন্দনাইশ সদরস্থ আমানতছফা বদরুননেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এলডিপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রাক্তন মন্ত্রী আলহাজ্ব ড. কর্নেল (অব:) অলি আহমদ বীর বিক্রম। প্রধান আলোচক ছিলেন দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. কফিল উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে এড. ফৌজুল আমিন, এড. গোলাম কিবরিয়া শিমুল, উপজেলা এলডিপির সভাপতি প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোতাহের মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আকতার আলম, এলডিপি নেতা আবিদুর রহমান বাবুল, এড. ইকবালুর রহমান। গণতান্ত্রিক যুবদলের সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন এলডিপি নেতা সিরাজ আহমদ, এলডিপি, গণতান্ত্রিক যুবদল নেতৃবৃন্দ। পরে কর্নেল অলি সাইফুল ইসলাম খানকে সভাপতি, সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার জন্য পরামর্শ দেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.