দোহাজারীর বিরাজমান সমস্যা নিরসনে ১৪ সদস্যের কমিটি গঠন

0

নিজস্ব সংবাদদাতা,চন্দনাইশ,সিটিনিউজ :  চন্দনাইশ দোহাজারীতে বিরাজমান সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, যে দুটি পাড়া নিয়ে ঘটনা সংগঠিত হয়েছে তাদের এলাকার লোকজনকে আগামীতে কোন ধরনের ঘটনা যেন না হয়, সে ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে। তাছাড়া পুরো দোহাজারী এলাকা শান্ত রাখতে দোহাজারী সদরসহ আশপাশের এলাকার লোকজনদের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি এক পর্যায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মারামারি করে জয় বাংলা ও এমপি’র যারা স্লোগান দিয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি কোন এলডিপি, বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করান নি। কিন্তু যারা তাঁর জন্য নির্বাচনে রক্ত দিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তাদেরকে পুলিশ তাড়াচ্ছে। এটা তাঁর কোন কাম্য ছিল না। সন্ত্রাসবাজী পরিহার করে দোহাজারীকে উন্নত বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তাছাড়া চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রীদের ইভটিজিং প্রতিরোধে তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পুলিশের জন্য একটি পিকআপ ভ্যান দেয়ার ঘোষণা দেন। সে পিকআপ ভ্যানটি শুধুমাত্র ইভটিজিং কারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন।

তিনি আরও বলেন, চন্দনাইশের দোহাজারী, ধোপাছড়ি, সাতকানিয়ার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে দোহাজারী সাংগু থানা হওয়ার প্রক্রিয়ায় গণশুনানী শেষে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। তাছাড়া ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাফর আলী হিরু, আ’লীগ নেতা বাবর আলী ইনু, চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বেগ, সাংবাদিক এম এ রাজ্জাক রাজ, সাবেক মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন, আ’লীগ নেতা যথাক্রমে আবদুস শুক্কুর, বশির উদ্দিন মুরাদ, নবাব আলী, প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুযশা চক্রবর্তী, মেম্বার শাহ আলম, এপিপি এড. আরিফুজ্জামান আরিফ, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম, তমিজুদ্দীনসহ ১৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

শনিবার (২২ জুলাই) বিকালে উপজেলা অডিটোরিয়ামে দোহাজারীতে বিরাজমান সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আহ্বানে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, দোহাজারীর সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।

আলোচনায় অংশ নেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোবারক হোসেন, থানা অফিসার ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন খন্দকার, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আবু আহমদ জুনু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাফর আলী হিরু, আ’লীগ নেতা যথাক্রমে বাবর আলী ইনু, চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বেগ, নবাব আলী, আবদুস শুক্কুর, আসকর খান বাবু, মেম্বার শাহ আলম, প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুযশা চক্রবর্তী, ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লোকমান হাকিম, আবদুল খালেক জগলু, যুবলীগ নেতা তমিজুদ্দীন, ফল ব্যবসায়ী মুন্সি মিয়া প্রমুখ।

সভায় বক্তাগণ দোহাজারীর বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে দোহাজারী সদর, উল্লাপাড়া, আজম পাড়া, বারুদখানা, সরকার পাড়া, পূর্ব দোহাজারী, খান বাড়ী, ঈদ পুকুরিয়া এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি ও একটি শর্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ সময় বক্তাগণ বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঈদের ৪ দিন পূর্বে দোহাজারী সদরের মো. রফিকের ছেলে মো. ইউসুফ (১৮) কে কিরিচ দিয়ে কোপ দিয়ে আহত করে। ঈদের ২ দিন পর তারই বড় ভাই মো. ইসমাইল (২১) কে পুনরায় মারধর করে আহত করে।

বর্তমানে উভয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। বক্তাগণ আরও বলেন, কিছু ব্যক্তি দোহাজারী পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছে। তাছাড়া ভাসমান ব্যবসায়ী থেকে চাঁদা আদায়েরও অভিযোগ উঠে আসে। সে সাথে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে কিছু বখাটে যুবক ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার পথে ইভটিজিং এর অভিযোগ পাওয়া যায়। তারা বলেন, যারা ছাত্রদের হাতে দা, কিরিচ, অস্ত্র তুলে দিয়েছে তাদেরকে তা ফিরিয়ে নিয়ে এ সকল শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে হবে।

সামাজিক প্রচার মাধ্যমে ফেইসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়ে চরিত্র ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে দোহাজারীতে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধ্বস নেমেছে। দোহাজারী আতংক জনপদে পরিণত হয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সভায় আজ ২৩ জুলাই থেকে ৩ জন যুবক এক সাথে মার্কেটে চলাফেরা করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে পুলিশ আটক করবে। যতদিন দোহাজারী শান্ত হবে না, এ আদেশ অব্যাহত রাখা হবে। আগামী ৩১ জুলাই এর মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

১ আগস্ট এ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানানো হয়। তাছাড়া দোহাজারীকে দখল মুক্ত, অপরাধীদের আখড়া, আতুর ঘর থেকে মুক্ত করতে অপরাধীদের আইনে আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসন প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দোহাজারী সদর থেকে ষ্টেশন রোড পর্যন্ত তিন স্তরে ৬০ টি সিসি ক্যামরা স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ খরচ স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যাক্তি, ব্যবসায়ী সমিতিসহ সর্বস্তরের মানুষ তাদের নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে স্বপ্রনোদিত হয়ে এগিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.