প্রধানমন্ত্রীর অবদানের কথা উল্লেখ না থাকায় ক্ষুব্ধ
সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকাশনায় প্রধানমন্ত্রীর অবদানের কথা উল্লেখ না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ।
আওয়ামীলীগ নেত্রী ও সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু জানান,
এই বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টা ও জননেতা দীপংকর তালুকদারের ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে যাতে এখানকার মানুষ উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বানী থাকা অবশ্যই বাঞ্চনীয় ছিল। তাছাড়া তাঁর অবদানের বিষয়টিও তুলে ধরা উচিত ছিল।
কিন্তু তা না করাটা দুঃখজনক ও ন্যাক্কারজনক কাজ। এটি মেনে নিতে পারছিনা। দলীয় ফোরামে এটি আলোচনায় তোলা হবে বলে জানান তিনি।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর বলেন,
বিষয়টি অবশ্যই নিন্দনীয় এবং খারাপ একটি কাজ। এটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচিত করেনি। এটি ভালো চোখে দেখারও সুযোগ নেই।
যাঁর অবদানে আজকের এই বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনাতে তাঁর নামটি না থাকা কোনো মতেই মেনে নেয়া যায়না।
জেলা আওয়ামীলীগ থেকে এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলা সভাপতি ঢাকায় দলীয় কাজে ব্যস্ত আছেন। তিনি ফিরলে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল বলেন, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জননেতা দীপংকর তালুকদারের ত্যাগ আন্তরিকতা ও শ্রমের ফসল।
পাহাড়ের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের প্রবল বাধার মুখে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে তাঁরা এই দুইটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠা এখানে করেছেন। এর কার্যক্রম শুরু করেছেন।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বানী না দিয়ে একটি অপরাধ করেছেন। পাশাপাশি পুরো বইয়ের কোথাও কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর অবদানের বিষয়টিও উল্লেখ করেননি।
এতে করে তাঁদের অবদানকে অশ্বীকার ও অসম্মান করা হয়েছে। এটি অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ। জেলা আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ সভাপতির সাথে আলোচনা করে করনীয় নির্ধারন করা হবে বলে জানান এই যুবলীগ নেতা।
রাঙামাটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না জানান, এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সময় জেএসএস বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের প্রবল বাধা উপেক্ষা করে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লাভ করার জন্য আন্দোলন করেছি।
দুঃখজনক সত্য হচ্ছে যে যারা বাধা দিয়েছিল আজ তারাই এই প্রতিষ্ঠানের ফায়দা লুটছে সবদিকে। প্রকাশনাতে প্রধানমন্ত্রীর নাম না দিয়ে তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা ও তাঁর অবদানকে অশ্বীকার করা হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
এদিকে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়নে সকল প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে প্রথম আন্দোলনকারী বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা রাঙামাটি জেলার সেই সময়কার সভাপতি ইয়াছিন রানা সোহেল জানান, এই সরকারের প্রথম মেয়াদে রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষনা দেয়ার পর পাহাড়ের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বাধার কারণে তা এখানে হতে পারেনি। এটি নোয়াখালিতে স্থানান্তরিত করা হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন প্রধানমন্ত্রী আবারো এখানে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ঘোষনা দেন। তখনও পাহাড়ের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বাধা দেয়। আর সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে প্রথম আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি ও এখানকার লোকজনের প্রতি সদয় হয়ে এই দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এজন্য তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকাশনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদানকে একেবারেই স্বীকার না করা অত্যন্ত দুঃখজনক। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রকাশ চাকমা জানান, এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিরোধীতা করেছিল পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। কিন্তু ছাত্রলীগ মাঠে থেকে তাদের প্রতিহত করেছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জননেতা দীপংকর তালুকদারের অবদান।তাঁদের অবদানকে পাশ কাটিয়ে কর্তৃপক্ষ যা করেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
আমরা প্রশাসনের সাথে এই বিষয়ে কথা বলব। প্রকৃত কারণ কি সেটা আমরা উদঘাটন করবো। এখানে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ইন্দন আছে কিনা তাও দেখব।