তারেক মাসুদ ছিলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা

0

সিটিনিউজবিডি :   চতুর্থ  মৃত্যুবার্ষিকী আজ চলচিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের ।  কাছের মানুষেরা বলেন নির্মাতা তারেক মাসুদ ছিলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। কোনদিন তাঁর স্বপ্ন ফেরির অভ্যেস থামেনি, থেমে যেতে জানতেনই না তিনি। প্রথম ‘কাগজের ফুল’ নিয়ে সহকর্মীদের সাথে বসেছিলেন ২০০৭ সালে, ২০০৮ সালে প্রথম বারের মতোন শ্যুটিং এর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু যেহেতু অনেক বড় আয়োজনের পরিকল্পনা মাথায় নিয়েই নেমেছিলেন এ যুদ্ধে। তাই বারংবার যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে উঠছে না দেখেই প্রতীক্ষা করেছেন প্রস্তুতির। ধীরে ধীরে সময়কে গুছিয়ে নিয়েছেন নিজের মতো করে।

১৩ই আগস্ট ২০১১ তে, চার বছর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুড়ির কাছে জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কাছে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর দু’জনেই চলে যান আমাদের ছেড়ে। সেদিন এই চলচ্চিত্রের লোকেশন দেখেই তাঁরা ফিরছিলেন।

জানা যায়, কলকাতায় তিনি ফ্ল্যাট নিয়ে থেকেছেন, দেখেছেন ঘুরে ফিরে আর কেবল ভেবেছেন এই চলচ্চিত্র নিয়ে। অন্যান্য কাজগুলোতে জড়িয়ে গেছেন ঠিকই তবু সরে দাঁড়ান নি ‘কাগজের ফুল’ এর পরিকল্পনা থেকে। এর মধ্যেই ২০১০ সালে মুক্তি পায় ‘রানওয়ে’।

পরবর্তীতে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে আজ ‘কাগজের ফুল’? এ প্রশ্নের উত্তর আমরা জানতে চেয়েছিলাম ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত এসময়ের তরুণ নির্মাতা প্রসূন রহমান এর কাছে। তিনি বলেন – ‘বার বার শুরু করে থেমে গিয়ে পুনরায় শুরু করেছেন তারেক ভাই এ ছবির কাজ। আমি ২০০৭ এ ইন্টার্ন হিসেবে ঢুকি, তখন এ ছবির কাজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাঝে অন্যান্য কাজ হতে থাকে। ২০০৮ এ আমি দেশের বাইরে গিয়ে ফিরে এসে আবার জয়েন করি, আমরা এরপর ‘নরসুন্দর’ এবং ‘রানওয়ে’ করি।

সর্বশেষ ২০১১তে তারেক ভাই নতুন উদ্যমে আবার উদ্যোগ নিলেন। কিন্তু তারপর তো আর চলেই গেলেন তিনি। ২০১৩ সালে সরকার বিশেষভাবে ‘কাগজের ফুল’ কে সরকারী অনুদান দিয়েছে। এখন ক্যাথরিন মাসুদ নতুন করেই আবার শুরু করবেন। আমরা সবাই ভাবছি এ নিয়ে, বসাও হচ্ছে, কথাও হচ্ছে। আসলে এটা বিশাল আয়োজনের ব্যাপার। ক্যাথরিন প্রায়ই বলেন ‘আমাদের সব ফুলগুলোর মধ্যে এ ফুলটা সবচে বড় তো তাই সময়ও বেশি লাগছে, অসুবিধা নেই।’।দল গঠন করা, শ্যুটিং এর পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসমস্তকিছুর মধ্যে বার বার নতুন করে শুরুও করতে হয়েছে তাঁকে। এর মধ্যে ২০১১তে তিনি নতুন করে আবার ভাবতে শুরু করেছিলেন ‘কাগজের ফুল’ নিয়ে। এই চলচ্চিত্রের জন্য মনমতো লোকেশন দেখতেই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন সহযোদ্ধা মিশুক মুনীরকে সাথে নিয়ে। মিশুক মুনীর, ক্যামেরার পেছনের এই খ্যাতিমান মানুষটির তারেক মাসুদের অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলোর মতোই তাঁর সাথে ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রেও কাজ করার কথা ছিল।

টিম কিংবা অভিনেতা-অভিনেত্রী সব নতুন করে ভাবতে হবে, যে চরিত্রে আগে যাকে ভাবা হয়েছিল এখন আর তাঁদের রাখা যাবে কি না সেটাও তো একটা কথা। ৪-৫ বছর তো কম সময় না। ছোট ছোট কাজগুলো চলছে। ‘ফেরা’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি করা হল। ক্যাথরিন মাসুদ প্রযোজিত এ চলচ্চিত্রটি আমি পরিচালনা করি। আর্কাইভের কাজও করছে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.