সীতাকুন্ডে পৌরসভা নির্বাচনের হাওয়া চাঙ্গা হচ্ছে রাজনীতি

0

কামরুল ইসলাম দুলু  :  দিনক্ষণ ঠিক না হলেও সীতাকুন্ডের পৌর এলাকায় সর্বত্র বইছে নির্বাচনের হাওয়া। সীতাকুন্ডে জিমিয়ে পড়া রাজনীতি আবারো চাঙ্গা হচ্ছে। চায়ের আড্ডায় কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও প্রথম শ্রেণীর এ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আসায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের সস্তুষ্টি লাভের জন্যও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তফসিল ঘোষণার আগেই ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এলাকায় পোস্টার লাগিয়ে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে এবং আগামী পৌরসভা নির্বাচনে তাদের প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে দিচ্ছে।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালে ১ এপ্রিল ২৮ বর্গমাইল আয়তনের সীতাকুন্ড পৌরসভা গঠিত হয়। এ পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন প্রায় ২৮ হাজারের মতো। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সীতাকুন্ড পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হলেও সরকারি নানা জটিলতার কারনে পৌর নির্বাচন হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শোনা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ থেকে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন অন্তত আট প্রার্থী। তাদের প্রচারণামূলক পোস্টারে শোভা পাচ্ছে পৌর এলাকায়। অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়েও জনসংযোগ চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় সমর্থন নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রভাবশালী ও শীর্ষ নেতাদের মন জোগানোর চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছেন তারা। কেউ কেউ ঢাকায় এসেও দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টায় আছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন, সীতাকুন্ড উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এবং বর্তমান পৌর মেয়র নায়েক(অবঃ)শফিউল আলম, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক কমিশনার আলহাজ¦ বদিউল আলম, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ¦ সিরাজ-উদ-দৌলা ছুট্টু, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এস জে এস হোসেন (লিটন), পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম।
বর্তমান মেয়র নায়েক (অবঃ) সফিউল আলম ইতিমধ্যে নির্বাচন করবেন না বলে ঘোষণা দিলেও বর্তমানে জানিয়েছেন যে, দলীয় সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়া। তিনি নির্বাচন না করলে তারই অনুসারী পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র জুলফিকার আলী শামীম ও কাউন্সিলর শফিউল আরম মুরাদ দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে এলাকায় শোনা যাচ্ছে। তবে আওয়ামীলীগ সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা সবাই জানিয়েছেন, দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক তারা প্রার্থিতার সিদ্ধান্ত নেবেন।
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে উপজেলা অওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়া জানান, বড় রাজনৈতিক দল থেকে একধিক নেতা প্রার্থিতার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে পৌর নির্বাচনে প্রার্থিতার ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।
নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে এখনো দলীয় সিদ্ধান্ত না হলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই। তারাও প্রার্থীতা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলার সিনিয়র নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছে। হলেন, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলো- পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ নিজামী, সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম আজাদ, উপজেলা বিএনপির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন, পৌর বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক আলমগীর ইমরান।
এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক জহুরুল আলম জহুর জানান, অনেক প্রার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তবে বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে কি-না তা এখনও নিশ্চিত নয়। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরে যে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই কাজ হবে।
অন্যদিকে উপজেলা জাতীয় পার্টির উপজেলা সভাপতি রেজাউল করিম বাহার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল আলম এর নাম শোনা যাচ্ছে।
এব্যাপারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জাতীয় পাটির সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম বাচ্চু জানান, আওয়ামীলীগ যদি আমাদের সাথে সমঝোতা না করে তাহলে তারা সীতাকু- মেয়র নির্বাচনে এককভাবে নির্বাচন করবে। এছাড়াও পৌর জামায়াতের আমীর তৌহিদুল হক চৌধুরী প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.