মোঃ সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি : তিন মাস ১০ দিন বিরতির পর কাপ্তাই হ্রদে বেড়েছে প্রাণঞ্চল্যতা। জেলে ও ব্যবসায়ীদের ইঞ্জিন বোটের ত্বরিত যাওয়া আসায় কাপ্তাই হ্রদে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। রোববার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদ মাছ শিকারের জন্য উন্মুক্ত করায় হ্রদে জেলেদের ব্যস্ততা বেড়েছে। মৎস্য অবতরণ ঘাটে সকাল থেকেই মাছ আসা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই মাছও ধরা পড়ছে প্রচুর। প্রথম দিনেই ছোট মাছ ও চাপিলা মাছ বেশি পাওয়া গেছে। বড় মাছ তেমন একটা পাওয়া যায়নি।
মৎস্য ব্যবসায়ি মোঃ আলম বলেন, প্রথম দিন হিসাবে মাছ ভালোই এসেছে। তবে ছোট মাছ বেশি। বড় মাছ নেই বলেই চলে।
ক্ষুদ্র মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ শাহ আলম বলেন, আমরা বলেছিলাম কোষ্ট গার্ড দেওয়ার জন্য কিন্তু বিএফডিসি দিয়েছে নৌ-পুলিশ। এই নৌ-পুলিশের জন্য আমাদের লাভ হয় নি বরং ক্ষতি হয়েছে। অস্ত্র ও পর্যাপ্ত সরংঞ্জাম না দেওয়ায় তারা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে নাই।
তিনি আরো বলেন, আমরা যেটুকু আশা করেছিলাম এইবার মৎস্য উৎপাদন হবে। মনে হয় সেটুকু হওয়া সম্ভব নয়। প্রথমদিনে বড় কোন মাছ আসে নি। এসেছে সব ছোট মাছ তাই আমরা হতাশ।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ি সমবায় সমিতির সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেছেন, প্রথম দিন হিসাবে মাছ ভালোই এসেছে। তবে বড় কোন মাছ আসে নি। এতে করে আমরা সবাই হতাশ কিন্তু তার পরেও আশা করি আমরা এইবার ভালোই মাছ পাবো।
বিএফডিসির কমান্ডার মাইনুল ইসলাম জানান, বিগত তিন মাস দশ দিন পরে এই মাছ আহরণ ও বিপণন কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত যে হারে মাছ আসছে তাতে বোঝা যাচ্ছে গতানুতিক যে মাছ পাওয়া যায়, তার চাইতে কোন অংশে কম হবে না। সংবাদ সংগ্রহ করা পর্যন্ত প্রথম দিনের মাছের পরিমান জানা না গেলেও ভালো পরিমাণে মাছ এসেছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, কেসকি ও চাপিলা মাছ বেশি পরিমানে এসেছে। এই দুই প্রজাতির মাছই রাজস্ব আদায়ের বেশি ভূমিকা রাখে। প্রথম দিন বড় মাছ না আসলেও এর পরের বার থেকে বড় মাছ আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিএফডিসির এই কর্মকর্তা আরো জানান, এইবার কাপ্তাই হ্রদে ২৭ টন (২৭ হাজার ১ শত ২৬ কেজি) মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে। এগুলো কাপ্তাই হ্রদের লংগদুর, কাঠলি এবং শহীদ মিনার ঘাটে অবমুক্ত করণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকারের ওপর জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কাপ্তাই হ্রদের মাছের স্বাভাবিক প্রজননের জন্য প্রতিবছর সাধারণত তিন মাস বা তার অধিক সময় মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। গত ২১ মে মধ্যরাতে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার উন্মুক্ত করে দেয় জেলা প্রশাসন।