জুবায়ের সিদ্দিকী –
আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাটি অবশেষে গত ২৭শে সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর মহানগর হাকিমের আদালতে চাঁদাবাজ আনোয়ারার মাহত্যা ইদ্রিস নামের কথিত মুক্তিযোদ্ধা এই মামলাটি করে। কুখ্যাত এই চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে নিবন্ধ লিখেছেন মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম। তিনি তার লেখাটি সরাসরি পাঠান ঢাকায় আজকের সুর্যোদয়ের সম্পাদকীয় ঠিকানায়। এ লেখা সম্পর্কে আমার জানার কোন অবকাশ ছিল না। লেখাটি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানা নেই, লেখকের সাথেও পুর্ব পরিচয় নেই। অথচ এই চাঁদাবাজ ইদ্রিস কোন রকম যাছাই বাছাই না করে আমাকে আসামী করে দায়ের করে মানহানির মামলা।
এর পর আমি আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্বসমর্পন করে জামিনলাভ করে ৯ মাসে প্রায় ৭ বার আমামে নির্দিষ্ট তারিখে আদালতে হাজির হতে হয়। কিন্তু মামলার বাদী কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও মামলাবাজ ইদ্রিস একদিনও আদালতে উপস্থিত হয়নি। এমনকি চার্জগঠনের পর পর ২ বার নির্ধারত করা হলেও সে আদালতে উপস্থিত হয়নি। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক চার্জ গঠনের দিন বাদী ও তার আইনজীবির অনুপস্থিতিতে এবং হাজিরা পিটিশন থাকা সত্ত্বেও দুজনের কেউ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফৌজদারী কার্যবিধির আইনের ধারা মোতাবেক মামলা খালাস এবং মামলার দায় থেকে আসামীদের অব্যাহতি দেন। বাদীর হাজিরাকে মিথ্যা মামলা হিসেবে গন্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
এই শ্রেষ্ট চাঁদাবাজকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন কিছু অসৎ ও সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ নেতা। ভুঁইফোড় কিছু সংগঠনের ব্যানারে এই ইদ্রিস এসব নেতাদের কখনো প্রধান অতিথি, কথনো বিশেষ অতিথি করে চালা ক্রেষ্ট বানিজ্য। এই বাবদে সে হাতিয়ে নেয় টাকা। এভাবে নগরীর দোস্ত বিল্ডিং এর একটি কক্ষে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। ক্রেষ্ট বানিজ্য ও চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্মের হোতা একজন মামলাবাজ। সে মামলা করে হাওয়া হয়ে যায়। সে মামলাকে হয়রানীর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আদালত ও বিচারককেও যে অবজ্ঞা করে তা আমার মামলায় বাদীর হাজিরা না থাকা এবং হাজিরা পিটিশন দিয়েও না থাকাই প্রমান করে। দীর্ঘ নয়মাস এ মামলা পরিচালনায় আমার সহকর্মীদের সহযোগিতা আমাকে অনুপ্রানিত করেছে। এ ছাড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের ভুমিকাও ছিল প্রশংসনীয়।
আদালতে প্রত্যেক কার্যদিবসে আইনজীবি ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, এডভোকেট তপন কুমার দাশ, এডভোকেট আজহার, এডভোকেট সালাউদ্দিন আহমেদ লিপু ভাইয়ের সহযোগিতার জন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। সাংবাদিকতা জীবনে মানহানির মামলা আগেও হয়েছে। তবে না লিখে, বিনা অপরাধে মামলা হয়নি। স্বাভাবিক ভাবে যদি মামলা হয় কোন সংবাদ বা নিবন্ধের জন্য, মামলার বিধান হচ্ছে যিনি লিখেছেন সেই লেখক, যিনি সম্পাদকনা করেছেন সেই সম্পাদক ও যিনি পত্রিকাটি প্রকাশনা করেছেন সেই প্রকাশকের বিরুদ্ধে। এ ক্ষেত্রে সে নিয়ম মানেনি এই গুনধর কথিত মুক্তিযোদ্ধা। সারাদেশে এভাবে কথিত মুক্তিযোদ্ধা নামধারীরা যে অপকর্ম করছে তা মাঝেমধ্যে পত্রিকায় উঠে আসে। এই ইদ্রিসকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে দিগম্বর করেছে একবার জনগন।
স্থানীয় পত্রিকায় এই দিগম্বরের ছবি সহ সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, আনোয়ারার কুখ্যাত এই কথিত মুক্তিযোদ্ধা নগরীতে অনুষ্টানের নামে কখনো ক্রেষ্ট বানিজ্য ও মেলা বাণিজ্য করে অবাধে চাঁদাবাজিতে চ্যাম্পিয়ন। সে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানী করলেও ইদ্রিসের মদদদাতা একশ্রেনীর সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মানুষের রয়েছে ক্ষোভ। চট্টগ্রাম শহরে মাহাত্যা ইদ্রিস নামে এই কুখ্যাত ব্যক্তিকে কিছু অসৎ সাংঘাতিক ও ভুয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের কতিপয় ব্যক্তিরা টাকা ও কুমন্ত্র দিয়ে ব্যবহার করে। এসব সাংঘাতিক সমাজে ও আমাদের সাংবাদিক সমাজেও চিহ্নিত। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই। চট্টগ্রামে হাইব্রীড নব্য আওয়ামী লীগার ও চামচা চাটুকার দ্বারা পরিবেষ্টিত এইসব কথিত মুক্তিযোদ্ধা নামধারীরা সমাজকে বারবার কলুষিত করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানী করছে।
মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বিরোধী ধান্ধাবাজ এই কুখ্যাত ইদ্রিস নগরীতে কখনো জেলা, কখনো বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি চালালেও কোন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না। কখনো কমান্ডার, কখনো নেতা পরিচয়ে এই চাঁদাবাজ মানুষকে অযথা হয়রানী করেছে বিভিন্ন সময়ে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আনোয়ারাতে অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত থাকায় সে বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা আক্রান্ত, নিগৃহীত হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, ধান্ধাবাজ ও চাঁদাবাজদের নিয়ে গঠিত তার একটি নিজস্ব বাহিনীও রয়েছে। এই কথিত মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে রয়েছে আমাদের কাছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আমরা যে সব তথ্য যাছাই বাছাই করে প্রকাশ করতে যাচ্ছি।
ইতিমধ্যে মানবাধিকার সাংবাদিক গ্রুপ তথ্য সংগ্রহ করছে এই মামলাবাজের বিরুদ্ধে। আজ নিজের লেখায় বা আমার কোন সহকর্মীর লেখায় মামলা হলে কোন দু:খ ছিল না। কিন্তু এই গর্দব আমার কোন সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও শুধু সন্দেহবশত মামলা করে । মামলা করার পর সে আমাকে বলেছিল,’ ভাই ভুল হয়ে গেছে। আমার উকিলকে বলবো মামলা শেষ করতে। এভাবে মানুষের সাথে প্রতারনা ও হয়রানী নাজেহাল করার কুবুদ্ধির দ্বারা প্রভাবিত ইদ্রিস সমাজে আজ একজন মামলাবাজ ও চাঁদাবাজ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরিচিত। সমাজের জিছু মানুষ এদেরকে ব্যবহার করে নিজেদের প্রচার করতে। ক্রেষ্ট ও অতিথি হিসাবে ঘন ঘন অনুষ্টানে আমন্ত্রন পাওয়ার জন্য কুখ্যাত ইদ্রিসকে মদদ জোগায় যারা, তাদেরও কুকীর্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে আজকের সুর্যোদয়। আমরা তাদেরও মুখোশ উম্মোচন করতে বদ্ধপরিকর।
যারা আজ সমাজ থেকে দেশেকে নিয়ে করছে ছিনিমিনি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আজ জরুরী। আদালতকে ব্যবহার করে যারা আইন নিয়ে তামাশা করছে তাদের বিরুদ্ধে ও আজ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। প্রতারক ও মামলাবাজ মাহাত্যা ইদ্রিসদের খায়েস বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দিয়ে প্রমান করেছেন যে, মিথ্যা নয়। সত্যের জয় অবধারিত।
সমাজে এসব কীটপতজ্ঞ সাংবাদিকতাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মাঝে মধ্যে। সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপুর্ন পেশা। মামলা, হামলা, প্রতিবাদ সহ নানা প্রবিন্ধতকায় এগুতে হয়। রাজনৈতিক আশ্রয়ে লালিত এসব কীট পোকামাকড় শুধু সমাজ ব্যবস্থাকে নয় সভ্য সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বাভাবিক কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত হকে। জনগনের জানার অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য সাংবাদিকদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
অসভ্য, টাউট, বাটপার, ধান্ধাবাজদের দখলে গেছে অনেক সংগঠন। নানা নামে ভুঁইফোড় সংগঠনের জন্ম দিয়ে ক্রেষ্ট বানিজ্য, সংবর্ধনা সহ বিভিন্ন আয়োজনের নেপথ্যে রয়েছে চাঁদাবাজি। সরকারী দলের কিছু সুযোগসন্ধানী ও সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনকারী কিছু পাতি নেতা, হাফ নেতা এসব ধান্ধাবাজদের নানাভাবে মদদ যোগানোর কারনে এরা এতই বেপরোয়া যে, কে দোষী, কে দোষী নয় এসব যাছাই বাছাই না করে মামলা ঠুকে দেওয়া তাদের বদঅভ্যাসে পরিনত হয়েছে। ধান্ধাবাজ, চাঁদাবাজ, টাউট বাটপার ও সুবিধাবাদীদের মুখোশ উম্মোচন করতে হবে আমাদের। না হয়, আমার মত নিরহ মানুষ এভাবে দোষ না করে মামলায় জড়িয়ে হয়রানীর শিকার হতে হবে।