আয়কর রিটার্ন না দিলে বেতন বন্ধ

0

অর্থ ও বাণিজ্য : সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে যাদের মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা বা তার চেয়ে বেশি তাদের আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগামী বুধবারের (৩০ নভেম্বর) মধ্যে যেসব চাকরিজীবী রিটার্ন জমা দেননি বা সময় বৃদ্ধির আবেদন করেননি তাদের বেতন বন্ধের সুপারিশ করে সম্প্রতি হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের (সিজিএ) কাছে চিঠি পাঠিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আগামী জানুয়ারি থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। এ নিয়ম কার্যকর হলে নতুন চার লাখ চাকরিজীবী করের আওতায় আসবে বলে মনে করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতন ১৬ হাজার বা তার বেশি হলে ওই কর্মচারীর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রতি মাসের বেতন বিলের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে হবে। অথবা রিটার্ন দাখিল না করে সময় বৃদ্ধির আবেদন করে থাকলে উপ-কর কমিশনারের অনুমোদিত আবেদনপত্রের কপি বেতন বিলের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বেতন পরিশোধের আগে বিলের সঙ্গে এসব কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে বেতন পরিশোধের সুপারিশ করা হয় চিঠিতে।

জানা গেছে, ঢাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর অঞ্চল-৪ এর অধিক্ষেত্রভুক্ত করদাতা। এই কর অঞ্চল থেকে কোন গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাসিক কত টাকা বেতনের বিপরীতে উৎসে কর হিসাবে কেটে রাখতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী, ১০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন থেকে ৪১৬ টাকা উৎসে কর হিসাবে কেটে রাখতে হবে। ইনক্রিমেন্ট পেয়ে বেতন সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছলে কর্মচারীদের ৭৩৪ টাকা কর দিতে হবে।

একইভাবে ৯ম গ্রেডের ৪১৬ থেকে শুরু করে ২ হাজার ১৭২ টাকা, ৮ম গ্রেডে ৪১৬ থেকে ২ হাজার ৪৮৮ টাকা, ৭ম গ্রেডে ৪১৬ থেকে ৩ হাজার ৫৩০ টাকা, ৬ষ্ঠ গ্রেডে ৫০৫ থেকে ৪ হাজার ৩ টাকা, ৫ম গ্রেডে ১ হাজার ৫২ থেকে ৪ হাজার ৩৭৬ টাকা, ৪র্থ গ্রেডে ১ হাজার ৭৭০ থেকে ৪ হাজার ৫৫৩ টাকা, ৩য় গ্রেডে ২ হাজার ৬২৩ থেকে ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা, দ্বিতীয় গ্রেডে ৩ হাজার ৮৭০ থেকে ৫ হাজার ২৯১ টাকা এবং প্রথম গ্রেডের কর্মকর্তাদের মাসিক ৫ হাজার ৫০৩ টাকা কর দিতে হবে।

তবে যদি কারও কর রেয়াতযোগ্য খাত যেমন সঞ্চয়পত্র, জীবন বিমার প্রিমিয়াম, প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ থাকে তাহলে ওইসব কর্মচারীকে কম কর দিতে হবে।

এর আগে এনবিআর চেয়ারম্যান সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে আয়কর আদায় নিশ্চিত করতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব, সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের চিঠি দেন।

ওই চিঠিতে বলা হয়, বেতন খাতে প্রাপ্ত আয়ের ওপর আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৫০ অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে, যা সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নতুন বেতন স্কেলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। এজন্য সব করযোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে উৎসে কর কর্তন নিশ্চিত করার তাগিদ দেন চিঠিতে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.