২ জন চিকিৎসক দিয়ে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা
মো. দেলোয়ার হোসেন,চন্দনাইশ : চন্দনাইশ উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে কার্যক্রম। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ উদাসীন বলে দাবী করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায় , দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জেলা পরিষদের ১০ কাটা জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় একজন ব্যক্তি। ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কার্যক্রমে অনেক ক্ষেত্রে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানান। গতকাল ৬ মে সকালে হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে ২ জন ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বে প্রতিষ্ঠিত ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে ১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টির শাসন আমলে জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে ৩১ শয্যায় উন্নীত করা হয়।
পরবর্তীতে আরও ৫ বছর পর ৩১ শয্যার কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জন্য ৭ জন চিকিৎসক দেয়া হলেও সে জনবল এখনো রয়েছে। বেড়েছে রোগী, আসন কিন্তু বাড়েনি চিকিৎসক। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার মানুষ। তাছাড়া ৭ জন ডাক্তারের স্থলে বর্তমানে রয়েছে মাত্র ৩ জন। আর.এম.ও ডেপুটেশনে, ডাক্তার আফসানা দিনা মাতৃত্বজনিত কারণে জানুয়ারি থেকে ছুটিতে, ই.এম.ও ও ডাক্তার শেখ সাদী ২ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও অধিকাংশ সময় তাদের প্রশিক্ষণ বা অন্য কোন কারণে হাসপাতালের না থাকলে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফেরত যায় রোগীরা।
তাছাড়া রান্না পদে ১ জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান নেই, সিনিয়র নার্স ৩, সহকারী নার্স ৪, এমএলএসএস ১টি পদ খালি রয়েছে। প্রতিদিন আউটডোরে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ রোগীর চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ৩১ শয্যায় অনেক সময় ৩৫ জন পর্যন্ত রোগী ভর্তি করা হয় বলে জানালেন ডাক্তার শেখ সাদী। তিনি জানালেন, বর্তমানে তিনি এবং ডাক্তার কামরুল হাসান ছাড়া অন্য কোন ডাক্তার নাই। হাইওয়ের পাশে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় রোগীর চাপও রয়েছে বেশি। এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার আলমের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাক্তার সংকট এবং পদ খালির ব্যাপারে একাধিকবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
এখনো কোন রকম সমাধান হয়নি বলে তিনি জানান। অপরদিকে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেছেন, দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উন্নয়ন খাতে হওয়ায় অনেক সুযোগ-সুবিধার বাইরে রয়েছে। বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ৭৩টি উন্নয়ন খাতের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে পরিদর্শন করে কিছু সংখ্যক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে রাজস্ব খাতে নেয়া হবে। তখন জনবল কাঠামো বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে ৫টি পদের ডাক্তারের মধ্যে ১ জন প্রশিক্ষণে, ১ জন মেটারনিটি ছুটিতে, ১ জন সম্প্রতি বদলী হয়েছে। ১ জনকে ইতিমধ্যে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তাছাড়া বর্তমান সরকার প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ জনের বেশি ডাক্তার রাখবেন না বিধায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে অতিরিক্ত ডাক্তার থাকায় অনেকটা সুবিধায় রয়েছে এ এলাকার মানুষ। স্থানীয় সাধারণ গরীব, অসহায় রোগীরা এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তথা মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।