জনদুর্ভোগ আর ভোগান্তির শেষ কোথায় ?

0

আবছার উদ্দিন অলি

প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন নগরবাসী। অশুভ ছায়া যেন নগরবাসী গ্রাস করে নিচ্ছে। বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা, পরিবহন সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, সবমিলিয়ে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে নগরবাসী। এ যাত্রায় সহসায় এর সমাধান মিলছে বলে মনে হয়না। রোজার আগ থেকে এ সমস্যার শুরু হলেও এখনো অব্যাহত রয়েছে। যাদের গাড়ী আছে, দামী ফ্ল্যাট আছে, তাদের কথায় বাদ দিলাম বাকী সব মানুষের দিন কিভাবে যাচ্ছে একমাত্র সৃষ্টিকর্তায় জানেন। অনেকের নুন আনতে পান্তা ফুরনোয় অবস্থা।

লজ্জায় কেউ কারোটা বলতে পারছে না কিংবা কারো সাথে শেয়ার করতে পারছেনা। জনগন দুর্ভোগে পড়ে এমন সমস্যা গুলো যেন একসাথে প্রতিযোগিতা দিয়ে মাঠে নেমেছে। জনদুর্ভোগ আর ভোগান্তি থেকে নগরবাসী মুক্তি চায়। এব্যাপারে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সমস্যা গুলোকে চিহ্নিতকরণ করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস চায় নগরবাসী।

ব্যাটারি চালিত রিকসা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে বাংলা রিকসা ও টেকসী ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন রাস্তায় ভাড়া নিয়ে হট্টগোল লেগেই আছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ীর বিরুদ্ধে অভিযানের কারণে রাস্তায় গণপরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। মহাসড়কে টেকসী বন্ধ করাতে অনেক মানুষ বেকার হয়ে গেছে। ৫লক্ষ টাকার বেশি দামে কেনা গাড়ী অলস পড়ে আছে। ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকার কারণে মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ টাকায়। বন্যার কারণে শাক সবজি দাম ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম ৬৫ টাকায় এখানো রয়েছে। সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার কারণে মাছের বাজারে মাছ কেনার সাহস হারাচ্ছে।

৮০ টাকার ফার্মের মুরগীর ডিম এখন ১১০ টাকায় ডজন বিক্রি হচ্ছে। অতিবৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে যা মেরামতও করা যাচ্ছে না। রাস্তা ভাঙ্গা থাকার কারণে যানজট লেগেই আছে। সামনে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে বলে কানা ঘোষা চলছে। জমির খাজনা বাড়ানো হয়েছে। পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য চলছে। জলাবদ্ধতা থেকে এই যাত্রায় রেহাই মিলছে না।

পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস অব্যাহত রয়েছে। ফ্লাইওভার এর কাজ চলার কারণে যানজট এখন শহর জুড়ে। ট্রাফিক ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য খারাপ অবস্থা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ী পাওয়া যাচ্ছে না। জোয়ারে পানি প্রায়শ প্লাবিত হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন এলাকা। কথায় কথায় আকষ্মিক পরিবহন ধর্মঘট চরম দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। সারা শহর জুড়ে যানজট লেগেই আছে। আবারও ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। পার্কিং চলছে রাস্তাজুড়ে। ডিজিটাল ব্যানারে তোষামোদি তেল মারা চলছে সমান তালে।

সরকারের ভালো অর্জন ও সাফল্য গুলোকে গুটি কয়েক লোক নষ্ট করে দিচ্ছে। বিকল্প ব্যবসা না নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। কোরবানী ঈদে গরুর দাম নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ এবার গর“র দাম বাড়বে। ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকার কারণে গর“ বাজার চলতি বছরের শুরু থেকে চড়া। নেপাল, ভূটান, বার্মা থেকে গরু আমদানি হলেও এ সমস্যার হয়তো কিছুটা লাঘব হবে। সরকারকে এ বিষয়ে দ্র“ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এত হতাশার পরও আশা করছি অচিরেই কালো মেঘের ঘনঘটা কেটে যাবে। আসবে সুদিন, আসবে সব মানুষের হাতে হাতে টাকা। সমস্যা গুলোর একে একে সমাধান হবে। জনভোগান্তি জনদুর্ভোগ কমে যাবে। অনিশ্চয়তার মধ্যে বেঁচে থাকাটা খুব কঠিন কাজ। তাই ভালোভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা চাই। চাই জীবনের নিরাপত্তা চাই শান্তি, চাই সমৃদ্ধি, চাই বাস যোগ্য নগরী।
লেখকঃ সাংবাদিক ও গীতিকার

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.